মসজিদের সভাপতি, ইমাম ও জামায়ত নেতার অত্যাচার থেকে বাঁচার আকুতি

স্টাফ রিপোর্টার॥ মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি, ইমাম ও জামায়ত নেতার অত্যাচার থেকে বাঁচার আকুতি জানিয়েছেন একটি মোতাওয়াল্লি পরিবার। বৃহস্পতিবার (২৯ মে) জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে বরিশাল প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেছে ওই পরিবার। দুপুর সাড়ে ১২টায় অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেরনে ওই পরিবারের মেয়ে আফসানা আহমেদ লিখিত বক্তব্যে বলেন,
তার মরহুম পিতা ২০১২ সালে স্ট্রোক করে মারা যান। তিনি কাশিপুর বাজারে নিজ অর্থে ওয়াজেদিয়া জামে মসজিদ নামক একটি মসজিদ প্রতিষ্ঠা করেন। মসজিদটির ইমাম এবং সভাপতি আমার বাবার সময়কার। তার বাবা মসজিদটির প্রথম এবং আমৃত্যু মোতাওয়াল্লি ছিলেন।
মসজিদটির ইমাম জাকারিয়া ঢাকা-বরিশাল মহাসড়ক সংলগ্ন একখানা জমি তার চাচা রফিকুল ইসলাম শাহিনের কাছ থেকে ক্রয় করেন, যার মূল্য কয়েক কোটি টাকা। এর সামনে ছিলো তাদের জমি। পরবর্তীতে তার (ইমাম) নজর পরে তার রাস্তা সংলগ্ন ভূমিতে। সে জমি বিক্রি করতে রাজি না হওয়ায় উক্ত মসজিদ কমিটির সভাপতি সালাম মিয়া সহ আওয়ামী লীগের তৎকালীন সভাপতি এবং আরো নেতাকর্মীর যোগাযোগে তার চাচা, ফুফুদের দ্বারা একটি জাল রোয়েদাদ সৃষ্টি করে
এবং তার মা ভাই বোনের স্বাক্ষর জালিয়াতি করে জাল রোয়েদাদ সৃষ্টির অপচেষ্টা করেন। এ ঘটনার পরে সে মামলা দায়ের করে রায় পান। পরবর্তীতে তার মাকে, খুন ও প্রাণনাশের হুমকি দেয়।
তিনি আরও বলেন, ২০২৩ সালে মসজিদের ২য় ইমাম নূরে আলম তার (আফসানা) পরিবারের বিরুদ্ধে পুলিশ কমিশনারের কাছে অভিযোগ দিলে তা মিথ্যা প্রমানিত হয়। ২য় ইমাম গত ২৬ জানুয়ারী তার উপর হামলা করে। এ ঘটনায় মামলা নং-সিআর মোঃ ৪১/২৫ (বিমানবন্দর) আদালতে চলমান রয়েছে।
এতে আরও ক্ষিপ্ত হয়ে ওটে তারা। মসজিদের কাছে আফসানার একটি স্টল রয়েছে। ওই স্টলটি দখলের জন্য মসজিদ কমিটি বিভিন্ন সময় স্টলটির মিটার ভেঙ্গে ফেলার হুমকি দেয়। এরপর ইট, বালু, সিমেন্ট এনে অবৈধভাবে ইমারত নির্মাণের তার স্টলটিকে মসজিদের সাথে একত্রিত করার জন্য গত ২৭ মে মাটিতে গাথুনি দেওয়া শুরু করেন।
আফসানা এর প্রতিবাদ করলে একজন ব্যক্তি যিনি নিজেকে জামায়াত সেক্রেটারী দাবি করে তার উপর চড়াও হন এবং এরপরে ২য় ইমাম নূরে আলম ওয়াজেদিয়া জামে মসজিদের সভাপতি সিরাজুল ইসলাম সহ ৫/৭ জনের নেতৃত্বে তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের পশ্চিম পার্শ্বে মব সৃষ্টির উদ্দেশ্যে ২৫০ জন মাস্তান প্রকৃতির লোক জড়ো করান। তারা সকলে মিলে তাকে এবং তার মাকে অকথ্য ভাষায় গালি গালাজ, ডিম ছুঁড়ে মারেন।
এছাড়া লাথি, কিল-ঘুষি মেরে গুরুতর আহত করেন। পরে আফসানার পরিবারকে আওয়ামী লীগের দোসর আখ্যা দিয়ে অবরুদ্ধ করে রাখে। এরপর পুলিশের সোপর্দ করে। কিন্তু তাদেরকে ছেড়ে দেয়।
ঘটনার পর থেকে এখন পর্যন্ত তারা চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। এমনকি নিজ বাসায় যেতে পারছেন না। তাদের ওপর মব সৃষ্টি করে যে নির্যাতন, খুনের চেষ্টা করা হয় তার বিরুদ্ধে সরকার ও প্রশাসনের কাছে এর ন্যায় বিচার দাবী করছেন আফসানার পরিবার।