কীর্তনখোলায় নিখোঁজ তিনজনের সন্ধ্যান এখনো মেলেনি

ডিসেম্বর ০৭ ২০২৪, ১৮:২৫

স্টাফ রিপোর্টার !! কীর্তনখোলা নদীতে বাল্কহেডের সাথে সংঘর্ষে যাত্রীবাহী স্পিডবোট ডুবির ঘটনায় নিখোঁজ তিনজনের এখনো সন্ধ্যান মেলেনি। শনিবার দুপুর পর্যন্ত নিখোঁজদের সন্ধ্যানে নৌ-পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা অভিযান অব্যাহত রেখেছেন।

নিখোঁজদের মধ্যে দুইজন যাত্রী এবং অন্যজন স্পিডবোটের চালক। বরিশাল সদর নৌ-থানার ওসি সনাতন চন্দ্র সরকার বলেন, আমরা অভিযান চালিয়েও ওই তিনজনের সন্ধান পাইনি।

নিখোঁজরা হলেন-বরিশাল মেট্রোপলিটন বিমানবন্দর থানাধীন রহমতপুর এলাকার দুলাল দাসের ছেলে ও ভোলায় ব্র্যাকের যক্ষা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির কর্মকর্তা সজল দাস (৩০), পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার নোওয়াপাড়া এলাকার আজগর আলীর ছেলে রাসেল আমিন (২৫) ও ভোলার উত্তর চর ভেদুরিয়া এলাকার বাসিন্দা ও স্পিডবোট চালক মো. আল-আমিন। দূর্ঘটনায় জালিস মাহমুদ নামে একজন নিহত হয়েছেন।

নিখোঁজ সজল দাসের বন্ধু তানভীর আহমেদ বলেন, আমরা যতোদূর জানতে পেরেছি, তাতে স্পিডবোটের চালক পালিয়েছেন। তিনি নিখোঁজ নন। কারণ ঘটনার সময় চালক স্পিডবোটটি চলন্ত অবস্থায় যাত্রীদের কাছ থেকে ভাড়া তুলছিলেন। ওই বোটে চালকসহ ১১ জন যাত্রী ছিলেন। চালকের খামখেয়ালির কারণেই স্পিডবোটটি দুর্ঘটনার কবলে পরেছে।

অপরদিকে শুক্রবার সন্ধ্যায় বাল্কহেড ও স্পিডবোটের সংঘর্ষের ঘটনায় কোতোয়ালি মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। বরিশাল সদর নৌ-থানার এসআই ওমর ফারুক জানান, মামলায় স্পিডবোট চালক আল-আমিন ও বাল্কহেড চালক আটক শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ থানার কোরালতলী এলাকার বাসিন্দা খালেক মাঝির নামোল্লেক করে অজ্ঞাতনামা আরও তিনজনকে আসামি করা হয়েছে।

সূত্রমতে, নিখোঁজ থাকা ব্যক্তিদের মোবাইল নাম্বার ব্যবহার করে তাদের স্বজনদের কাছে টাকা দাবি করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনার থানায় সাধারণ ডায়েরী করার পর তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। দুর্ঘটনায় নিখোঁজ সজল দাসের মোবাইল নম্বর থেকে তার মায়ের মোবাইল নাম্বারে কল করে ২৫ হাজার টাকা দাবি করার অভিযোগ এনে নিখোঁজ সজলের চাচা শংকর দাস শুক্রবার দিবাগত রাতে কোতোয়ালি মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছেন। শংকর দাস বলেন, নিখোঁজ স্পিডবোটের চালক আল-আমিন ও যাত্রী রাসেলের স্বজনদের কাছেও একইভাবে টাকা দাবি করা হয়েছে।

শনিবার দুপুরে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সে বরিশাল কার্যালয়ের উপ-সহকারী পরিচালক মো. বেলাল উদ্দিন বলেন, নদীর উপরি অংশে অনুসন্ধানের পর আমাদের ডুবুরিরা তলদেশে অনুসন্ধান চালিয়েছেন কিন্তু নিখোঁজ ব্যক্তিদের এখনও কোন সন্ধান মেলেনি। তবে আমরা এখনো অভিযান শেষ করিনি।

উল্লেখ্য, গত ৫ ডিসেম্বর বিকেলে ভোলা থেকে স্পিডবোটটি ১০ জন যাত্রী নিয়ে বরিশালের উদ্দেশে রওনা হয়। পথিমধ্যে কীর্তনখোলা নদীর লাহারহাট খালের প্রবেশমুখে জনতারহাট এলাকায় বাল্কহেডের সাথে স্পিডবোটের সংঘর্ষের ঘটনায় পিরোজপুরের ভান্ডারিয়া উপজেলার বাসিন্দা ও স্কয়ার ফুড অ্যান্ড বেভারেজ কোম্পানির ভোলার বিক্রয় প্রতিনিধি (এসআর) হিসেবে কর্মরত জালিস মাহমুদ (৫০) নামের এক যাত্রী নিহত, বরগুনা সদরের বাসিন্দা ও ভোলার দৌলতখান থানার কনস্টেবল হিসেবে কর্মরত মানসুর আহমেদ গুরুত্বর আহত ও তিনজন নিখোঁজ হন। বাকিরা দূর্ঘটনার পর সাতরিয়ে তীরে উঠতে সক্ষম হয়েছেন।