কেঁচো সার উৎপাদন করে স্বাবলম্বী বরিশালের ডলি বিশ্বাস

জুন ২৫ ২০২৫, ০১:৪৮

স্টাফ রিপোর্টার : ভার্মি কম্পোস্ট বা কেঁচো সার উৎপাদন করে স্বাবলম্বী হয়েছেন বরিশালের ডলি বিশ্বাস। বাড়িতে বসেই গোবর ও কেঁচো ব্যবহার করে এই জৈব সার তৈরি করছেন তিনি। তার উৎপাদিত কেচো সার পরিবেশবান্ধব এবং মাটির উর্বরাশক্তি বৃদ্ধি করায় এ সারের চাহিদা দিন দিন বাড়ছে। এই সার মাটিকে তাজা করে। কোনও ক্ষতিকর দিক নেই।

দামেও বেশ সস্তা। তাই কৃষকেরও পছন্দ করে এই সার। বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার রাজিহার ইউনিয়নের রামানন্দের আঁক গ্রামের ডলি বিশ্বাস। সংসারের অভাব-অনটন দিন কাটাতেন, পরে কারিতাসের ধরিত্রী প্রকল্পের আর্থিক সহয়তায় ভার্মি প্রদর্শনী শেড তৈরি ক কোঁচো সার(ভার্মি কম্পোস্ট) উৎপাদন এবং বাজারজাতকরন করে ডলি বিশ্বাস স্বাবলম্বী।

প্রথমে কারিতাসের সহয়তায় ৩ টি চারি দিয়ে এ সার উৎপাদন শুরু করেন।বর্তমানে তার ১৩ টি রিং দিয়ে ভার্মি কম্পোস্ট সার উৎপাদন করে খুচরা ও পাইকারি বিক্রি করে স্বাবলম্বী হয়েছে। এ ভাবে ডলি বিশ্বাসের মত কারিতাসের সহযোগিতা নিয়ে ৪৬২ জন পুরুষ ও মহিলা স্বাবলম্বী হয়েছে।

ডলি বিশ্বাস বলেন, সার উৎপাদনের জন্য কেঁচো থেকে সার তৈরির জন্য ১৫ দিনের পুরাতন গোবর লাগে। কেঁচো গোবর খাওয়ার পর যে মল ত্যাগ করে তা থেকে ভার্মি কম্পেস্ট সার উৎপাদন করা হয়।আর এই সার বিক্রি কওে আমি স্বাবকলম্বী হয়েছি।স্থানীয় কৃষক আবু মিয়া বলেন, বাজারে রাসায়নিক সারের তুলনায় জৈব সারের দাম কম। তাই আমরা জমিতে জৈব সার ব্যবহার শুরু করেছি। ভালো ফলও পাচ্ছি। এই সার ব্যবহার করে জমির উর্বরতা বাড়ছে, মাটির ক্ষতি হচ্ছে না। ফলনও ভালো পাচ্ছি।একই এলাকার আরেক কৃষক হারু মিয়া বলেন, আমার সবজি বাগান রয়েছে। আগে ব্যাপক হারে নানান রাসায়নিক সার ব্যবহার করা হতো। কেঁচো সার উৎপাদনের পর থেকেই এ সার ব্যবহার করা হচ্ছে। এতে আমার খরচও কমেছে।

কারিতার ধরিত্রী প্রবল্পের উপজেলা ইনচার্জ এডওয়ার্ড অন্তু রায় জানান.বাড়িতে আজ বাংলাদেশ ধরিতে প্রকল্পের মাধ্যমে স্থানীয় কৃষকগণ ভার্মি কম্পোস্ট উৎপাদন, ব্যবহার ও বাজারজাত কারণে এর মাধ্যমে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হচ্ছে। কৃষকরা কেঁচো সার উৎপাদনের পাশাপাশি নিজেরা ব্যবহার করছে, বস্তায়, ভাসমান পদ্ধতিতে, জৈব পদ্ধতিতে চাষাবাদ করে বিষমুক্ত শাকসবজি উৎপাদন করছে। তারা পরিবেশ বান্ধব কাজ করে নিজের পরিবার ও দেশের উন্নয়ন কাজে ভূমিকা পালন করছে।

বরিশাল অতিরিক্ত উপ পরিচালক কৃষিবিদ মোঃ রেজাউল হাসান বলেন, কেঁচো কম্পোস্ট সারের রয়েছে নানান উপকারিতা। ফলন বৃদ্ধি ও গুণগত মান বাড়ায়। সব ঋতুতে সকল ফসলে ব্যবহার করা যায়। কেঁচো কম্পোস্ট সার বীজের অংকুরোদগমে সহায়তা করে, মাটির তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে। মাটির গঠন ও প্রকৃত গুণ রক্ষা করে। মাটির উপকারী অনুজীবের বংশবৃদ্ধি ও কার্যকারিতা বাড়ার ফলে চাষিরাও এই সার ব্যবহারে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে।