হিজলায় ব্যবসায়ীর ৩ লক্ষাধিক টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনায় মামলা নেয়নি পুলিশ

হিজলা প্রতিনিধি : বরিশালের হিজলা উপজেলার গৌরাব্দী ইউনিয়নের মান্দ্রা তরকুশুরিয়া গ্রামে সয়াবিন ব্যবসায়ী রহিম মাঝির কাছ থেকে ৩ লাখ ৬৩ হাজার ৭০ টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনায় প্রায় এক সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও এখনো মামলা নেয়নি হিজলা থানা। এতে স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভ ও উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, থানার নবনিযুক্ত অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শেখ আমিনুল ইসলাম অভিযোগ নেওয়ার আশ্বাস দিলেও আজও কোনো ধরনের আইনি অগ্রগতি দেখা যায়নি।
গত ৭ মে সকাল ৯টা ৩০ মিনিটে ঘটনার সময় রহিম মাঝি পার্শ্ববর্তী ইউসুফ হাওলাদারের বাড়িতে সয়াবিন কিনতে যাচ্ছিলেন। পথে স্থানীয় মনির পাটোয়ারীর বাড়ির সামনে পূর্বপরিকল্পিতভাবে ওঁৎ পেতে থাকা দুর্বৃত্তরা তার উপর হামলা চালিয়ে টাকা ও ব্যাগ ছিনিয়ে নেয়। এই ঘটনায় আনোয়ার পাটোয়ারী, তার ছেলে শরিফ পাটোয়ারীসহ আরও কয়েকজনের বিরুদ্ধে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত থাকার অভিযোগ উঠে আসে। প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে জানা যায়, আনোয়ার ঘটনাস্থলে বলেছিলেন, “এইটা আমার এলাকা, এখানে সয়াবিন কিনলে মনপ্রতি ৫০ টাকা দিতে হবে, না হলে কিনতে পারবি না।”
ঘটনার পর ভুক্তভোগী রহিম মাঝি থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। কিন্তু একাধিকবার থানায় গিয়েও তিনি কোনো প্রতিকার পাননি। তিনি বলেন, “আমি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উপর ভরসা করেই অভিযোগ দিয়েছি, কিন্তু এখন মনে হচ্ছে অপরাধীরাই বেশি শক্তিশালী।”
এ বিষয়ে জানতে চাইলে হিজলা থানার ওসি শেখ আমিনুল ইসলাম বলেন, “আমরা লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।” তবে প্রায় এক সপ্তাহ পার হলেও মামলা না নেওয়ায় সাধারণ মানুষের মধ্যে থানার ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
এদিকে স্থানীয়রা অভিযোগ করছেন, অভিযুক্ত আনোয়ার পাটোয়ারী এলাকায় একজন প্রভাবশালী ও বিতর্কিত চরিত্র হিসেবে পরিচিত। তার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, জলদস্যুতা ও ভূমি দখলের একাধিক অভিযোগ রয়েছে। রহিম মাঝির ঘটনায়ও তার সম্পৃক্ততা নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই বলে দাবি করছেন এলাকাবাসী।
সুশীল সমাজ ও মানবাধিকার সংগঠনগুলো এই ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে বলছে, “নিরীহ ব্যবসায়ীর উপর হামলা এবং টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনায় পুলিশের নিষ্ক্রিয়তা বিচারহীনতার সংস্কৃতিকে উৎসাহিত করছে।”
এই ঘটনার দ্রুত তদন্ত ও মামলা গ্রহণের মাধ্যমে দোষীদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগী ও স্থানীয় সচেতন মহল। তাদের প্রশ্ন, *আইনের আশ্রয় নিতে গিয়েও যদি মানুষ বিচার না পায়, তাহলে কোথায় যাবে সাধারণ জনগণ?