বিএম কলেজের পর শিক্ষা বোর্ডেও যোগদান করতে পারেনি ফাতেমা হেরেন

স্টাফ রিপোর্টার !! বিতর্ক যেনো পিছু ছাড়ছে না বরিশাল শিক্ষা বোর্ডের সদ্য নিয়োগ পাওয়া সচিব অধ্যাপক ড. ফাতেমা হেরেনের। এবারও শিক্ষার্থীদের বাধার মুখে যোগদান করতে পারেননি তিনি। সরকারি বিএম কলেজের কতিপয় শিক্ষকের কারনে ফাতেমা হেরেন বারবার বাঁধার সন্মুখিন হচ্ছেন বলে দাবী করেছেন। তার আগেও এক শিক্ষক সচিব পদে নিয়োগ পেলেও তিনি ওই পদে যোগদান করেননি। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে এ বিষয়ে মঙ্গলবার বিকেলেই লিখিতভাবে জানিয়েছেন বোর্ড চেয়ারম্যান।
সরকারি ব্রজমোহন (বিএম) কলেজে ইতিহাস বিভাগের বিভাগীয় প্রধানের দায়িত্বে ছিলেন ফাতেমা হেরেন। সরকার পতনের পর সেই বিএম কলেজের উপাধ্যক্ষের দায়িত্ব পেয়েছিলেন। কিন্তু শিক্ষার্থীদের বাঁধার কারনে যোগদান করতে পারেননি। তার পর বরিশাল মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের সচিব পদে নিয়োগ পেলেন। এবারও সেই ছাত্রদের বাঁধায় তার যোগদান ভেস্তে গেছে।
জানা গেছে, চলতি বছরের ৯ জানুয়ারি বরিশাল শিক্ষা বোর্ডের সচিব সোমনাথ মন্ডলকে হবিগঞ্জের বিন্দাবন সরকারি কলেজে বদলি করা হয়। এই পদে বরিশালের সরকারি ব্রজমোহন কলেজের মৃত্তিকাবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মোঃ মাহমুদুল ইসলামকে পদায়ন করে প্রজ্ঞাপন জারি করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। তবে কি কারণে পদায়নের মাত্র ১৫ দিনের মাথায় অধ্যাপক ড. মাহমুদুল ইসলামকে সচিব পদ থেকে বদলি করা হলো তা জানা যায়নি।
তাই পদায়নের ১৫ দিনের মাথায় সরানো হয় বরিশাল শিক্ষা বোর্ডের সচিব অধ্যাপক ড. মাহমুদুল ইসলামকে। তার স্থলে নতুন সচিব পদে পদায়ন পেয়েছেন অধ্যাপক ড. ফাতেমা হেরেন। ২৬ জানুয়ারী রবিবার মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের উপসচিব মো: মাহবুব আলম স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানা গেছে।
বরিশাল শিক্ষা বোর্ডের নতুন সচিব পদে পদায়ন পাওয়া অধ্যাপক ড. ফাতেমা হেরেন (ইতিহাস) বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের ১৬ ব্যাচের কর্মকর্তা। তিনি মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের সংযুক্ত কর্মকর্তা এবং পটুয়াখালীর সরকারি মোজাহার উদ্দিন ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তার আগে তিনি সেপ্টেম্বরের প্রথম দিকে সরকারি বিএম কলেজের উপাধ্যক্ষ পদে পদায়ন করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। কিন্তু তখনো শিক্ষার্থীদের বাঁধার কারনে ওই পদে যোগদান করতে পারেননি।
দুটি জায়গাতেই শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে যোগদানে বাঁধা দেয়ার প্রথম সারিতে ছিলেন সরকারি বিএম কলেজের শিক্ষার্থী আকবর মুবিন। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ফাতেমা হেরেন আওয়ামী লীগের দোসর। ইসলামের শক্র। এর আগেও তিনি বিএম কলেজের উপাধ্যক্ষ হিসেবেও যোগ দেয়ার চেষ্টা চালিয়েছেন। তখন আমরা তাকে প্রতিহত করেছি। শিক্ষা বোর্ডে আবার সচিব হিসেবে তাকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। আমরা বোর্ড চেয়ারম্যানকে বলেছি, হেরেনের আদেশ বাতিল করতে হবে। এ বিষয়ে বিভাগীয় কমিশনারকেও জানানো হয়েছে।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ আওয়ামী লীগের সঙ্গে জড়িত ছিলেন ড. ফাতেমা হেরেন। তবে বিষয়টি মানতে নারাজ ফাতেমা হেরেন। তিনি বলেন, সরকারি বিএম কলেজের কতিপয় শিক্ষক ছাত্রদের ব্যবহার করে আমাকে যোগদান থেকে বিরত রেখেছেন। তারা যাচ্ছেন না আমি সচিব হিসেবে বোর্ডে যোগদান করি। আমি তাদের প্রতিহিংসার শিকার। ছাত্র জীবনে নাটক করেছি। কোন দলের রাজনীাতর সঙ্গে যুক্ত ছিলাম না। শিক্ষকতা জীবনে কখনই রাজনীতির ধারেকাছেও ঘেঁষেনি। তিনি আরো বলেন, আমি সচিব পদে অনলাইনে যোগদানের অনুরোধ পাঠিয়েছিলাম, কিন্তু চেয়ারম্যান তা অনুমোদন দেননি।
বরিশাল মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. ইউনুস আলী সিদ্দিকী বলেন, সচিব পদে নিয়োগ পেয়ে ফাতেমা হেরেন যোগদানের জন্য আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন। কিন্তু তার আগেই ছাত্রদের চাইছিলেন, তিনি যেন যোগদান না করেন। এ দাবি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট শাখায় লিখিতভাবে মঙ্গলবার জানানো হয়েছে। সচিবের যোগদানের বিষয়ে এখন মন্ত্রণালয় সিদ্ধান্ত নেবে।