দখলমুক্ত হয়েছে খাল-সড়ক-ফুটপাত
বিসিসি’র উচ্ছেদ অভিযানে পাল্টে যাচ্ছে নগরীর চিত্র

কাজী রাফি ॥ বরিশাল সিটি করপোরেশনের একের পর এক উচ্ছেদ অভিযানে পাল্টে যাচ্ছে নগরীর চিত্র। উদ্ধার হয়েছে খাল, সড়ক ও ফুটপাত। পরিস্কার পরিচ্ছন্ন ও মশার বিস্তার নিয়ন্ত্রণ হয়েছে অনেকাংশে। বিসিসি’র এমন উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন নগরবাসী। পাশাপাশি প্রতিনিয়ত অবৈধ উচ্ছেদ অভিযান চালিয়ে যাওয়ার দাবী জানান তারা।
জানা গেছে, বরিশাল সিটি করপেরশেনের প্রশাসক হিসেবে রায়হান কাওসারকে নিয়োগ দেয়ার পর থেকে কঠোর হস্থে দায়িত্ব পালন করছেন তিনি। তার নির্দেশনায় এমন দুঃসাহসিক উচ্ছেদ অভিযান পরিচালিত হয়েছে। কোন কোন উচ্ছেদ অভিযানে প্রশাসক রায়হান কাওসার নিয়েই নেতৃত্ব দিয়েছেন। তার দৃঢ় নেতৃত্বের কারণে উদ্ধার হয়েছে নগরীর গুরুত্বপূর্ন খাল, সড়ক ও ফুটপাত। এছাড়া দখলমুক্ত হয়েছে সিটি করপোরেশনের জমি। উচ্ছেদ অভিযান প্রসঙ্গে বিসিসি’র প্রশাসক রায়হান কাওসারের বক্তব্য, “এটি কোনো এককালীন অভিযান নয়, বরং এটি একটি সিস্টেমেটিক ক্লিনজিং ক্যাম্পেইন।”
এর আগে স্কুল-কলেজের সামনের ফুটপাতসহ নগরীর বিভিন্ন ব্যস্ততম এলাকার ফুটপাত ছিলো হকারদের দখলে। জনসাধারণের চলাচলের রাস্তা ও ড্রেন দখল করে গড়ে উঠেছিল বিভিন্ন দোকান-পাট সহ বসতবাড়ির সীমানা প্রাচীর ও স্থাপনা। উচ্ছেদ অভিযানে দখলমুক্ত করা হয় সে সকল রাস্তা ও ড্রেন। ফুটপাত দখলমুক্ত হওয়ায় চলাচলে স্বস্তি ফিরেছে। ফলে হ্রাস পেয়েছে জলাবদ্ধতা এবং কমেছে মশার উপদ্রব। এছাড়া নগরীর প্রধান সড়কগুলেতে কমেছে যানজট।
বিসিসি সূত্র জানায়, পরিস্কার পরিচ্ছন্ন নগরী গড়তে ফুটপাত ও ড্রেন পরিস্কার, মশার বিস্তার রোধে নগরীর কাশিপুর চৌমাথা থেকে বিল্লবাড়ি সড়ক (মাজার) পর্যন্ত খালের পাশের ২৫/৩০ টি স্টল, মড়ক খোলার পোল থেকে লাকুটিয়া খালের পাশের অবৈধ স্থাপনা, লাদেন সড়কের অবৈধ স্থাপনা, শের-ই বাংলা সড়ক ও জিয়া সড়কের খালের দুই পাশের অবৈধ স্থাপনা, পরেশ সাগর মাঠ, সদর গার্লস্ স্কুলের সামনে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে বরিশাল সিটি করপোরেশন।
নগর বিশেষজ্ঞদের মতে, খাল সংরক্ষণে কংক্রিট বাউন্ডারি ওয়াল তৈরী করতে হবে, স্মার্ট ফুটপাত নির্মাণ প্রকল্পে কার্যকরী উদ্যোগ নিতে হবে, প্রতি মাসে ‘মাসিক ক্লিন সিটি ডে’ পালন করতে হবে। এছাড়া দখল রোধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলা জরুরি বলে মনে করেন তারা।”
এদিকে কঠোর উচ্ছেদ অভিযানে নগরীতে স্বস্তি ফিরলেও জীবিকা সংকটে পরেছে ফুটপাত ও সড়কের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা। তারা বলছেন, সিটি করপোরেশনের উচ্ছেদ অভিযানে শতশত ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভেঙ্গে ফেলা হয়েছে। আজ তারা বেকার। তাই কর্মসংস্থান সৃষ্টি করে ফুটপাত ব্যবসায়ীদের উচ্ছেদ করার দাবী জানান তারা।
এ ব্যাপারে বরিশাল সিটি করপোরেশনের উচ্ছেদ শাখার প্রধান স্বপন কুমার দাস বলেন, পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা, জলাবদ্ধতা ও মশার বিস্তার রোধে ড্রেন এবং খালের দুপাশে নির্মিত অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে। এ ধরণের অভিযান অব্যাহত থাকবে।
বিসিসি’র জনসংযোগ কর্মকর্তা আহমান উদ্দিন রোমেল বলেন, উচ্ছেদ অভিযান একটি চলমান প্রক্রিয়া। প্রশাসকের নির্দেশে অবৈধভাবে ফুটপাত, খাল ও সড়ক দখলকারীদের বিরুদ্ধে এ ধরণের অভিযান চলবে।