হচ্ছে না বরিশাল সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শতবর্ষ পূর্তি অনুষ্ঠান

স্টাফ রিপোর্টার !! বিভিন্ন জটিলতার কারণে বরিশাল সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শতবর্ষ পূর্তি উদযাপিত হচ্ছে না। ফলে নিবন্ধনকৃত শিক্ষার্থীদের চাঁদার টাকা ফেরত দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন। আজ মঙ্গলবার বরিশাল প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে বিষয়টি তুলে ধরেণ বরিশাল সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শতবর্ষ পূর্তি উপলক্ষে গঠিত অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের আহবায়ক প্রফেসর শাহ সাজেদা। এ সময় অর্থ বিষয়ক আহবায়ক নাসরিন জাহান পিউরিসহ অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের অন্যান্য সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে প্রফেসর শাহ সাজেদা বলেন, বরিশাল সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শতবর্ষ পূর্তিতে পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে বিভিন্ন সময়ের আলোচনার মধ্যদিয়ে ২০২৩ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর এক সাধারণ সভায় একটি আহবায়ক কমিটি করে নিবন্ধন প্রক্রিয়া শুরু হয়। এতে প্রাক্তণ শিক্ষার্থীরা আনন্দের সাথে নিবন্ধন করতে থাকেন। পরে কতিপয় প্রাক্তন ছাত্রীরা নিবন্ধনের সময় সীমা বাড়ানোর অনুরোধ করেন। এরপর আওয়ামী লীগ দলীয় বরগুনা ২ আসনের সাবেক এমপি সুলতানা নাদিরাকে আহবায়ক ও সানজিদা শাহনেওয়াজকে সদস্য সচিব করে আওয়ামী লীগের তৎকালীন সাবেক এমপি ও মন্ত্রীদের নাম রেখে তারা একটি পাল্টা কমিটি গঠন করে। শতবর্ষ উদযাপন পরষদ ২০২৪ নামে ব্যাংক হিসাব খুলে আলাদা নিবন্ধনও করেন তারা। প্রাক্তন ছাত্রীদের সাড়া না পেয়ে এক পর্যায়ে তাদের করা নিবন্ধনকৃতদের টাকাও ফেরত দেন তারা। এরপর থেকে তারা আমাদের কমিটির উপর চাপ প্রয়োগ করতে থাকে নিবন্ধনকৃত ২৬৩৮ শিক্ষার্থীর অর্থ নিয়ে যাওয়ার জন্য। কিন্তু তাতে তারা ব্যর্থ হন। তৎপরিবর্তীতে গণ অভ্যুত্থানে সরকারের পতন ঘটলে তারাও চলে যান আত্মগোপনে।
শাহ সাজেদা আরও বলেন, তাদের কমিটি নতুন করে উদ্যোগ নেন অনুষ্ঠান করার। কিন্তু আওয়ামী লীগ দলীয় সাবেক এমপি সুলতানা নাদিরার কমিটির অনেকেই আবার বাধা দিতে থাকেন। আইনী নোটিশ প্রদান, মানববন্ধন ও জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপিও দেন তারা। অনুষ্ঠান স্থগিত করার দাবি জানান তারা। এছাড়া স্কুলে টানিয়ে দেন অনুষ্ঠান স্থগিত করার ব্যানার। এরপর জেলা প্রশাসকের পরামর্শে উদ্ভত পরিস্থিতিতে অনুষ্ঠান না করার সিদ্ধান্ত হয়। তারাও টনিবন্ধনকৃত ছাত্রীদের টাকা ফেরত দেওয়ার ঘোষণা দেয়।
লিখিত বক্তব্যে শা সাজেদা বলেন, সাবেক এমপি বিলকিস জাহান শিরিন এর নেতৃত্বে ফয়জুন নাহার সেলিকে আহবায়ক ও সানজিদা শাহনেওয়াজকে সদস্য সচিব করে আবার গঠিত হয় আরো একটি উদযাপন কমিটি। তাদের অধিকাংশের নিবন্ধন না করা ও ব্যাংক হিসাব খোলার কথা গোপন রেখে আমাদের কমিটির কয়েকজনকে চাপ প্রয়োগ ও ভয়ভীতি প্রদর্শনের মাধ্যমে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করতে বাধ্য করান।
এ খবর ব্যক্তি ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ‘বরিশাল সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন’ ফেইজবুক পেইজে প্রচারিত হলে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। পরে কমিটির সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যদের বিরোধীতা অন্যদিকে নিবন্ধনকৃত শিক্ষার্থীরা অনুষ্ঠান না করে তাদের টাকা ফেরত চাইতে ঐক্যবদ্ধ হয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, অনলাইন, অফলাইন, ফোনে তারা তাদের টাকা ফেরত চাওয়া অব্যাহত রেখেছেন। টাকা ফেরত চাইতে শুরু করে গণস্বাক্ষর কর্মসূচী। শুধু তাই নয় নিবন্ধনকৃতরা রিফান্ড কমিটি গঠন করে টাকা ফেরত নিতে তালিকা প্রেরণ করে।
এদিকে মূল অনুষ্ঠানের আলাপ আলোচনা ছাড়াই ফয়জুন নাহার সেলির কমিটির কয়েকজন ‘বরিশাল সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন’ হিসাব নম্বর ০৩০৪৬০১০৩১৩৪২ নামক হিসাব থেকে অন্য হিসাব নম্বরে ফান্ড ট্রান্সফারের জন্য চাপ প্রয়োগ করেন। নিবন্ধনকৃত শিক্ষার্থীরা ফান্ড ট্রান্সফারের চরম বিরোধীতা করেন। এমতবস্থায় চুক্তির শর্ত ভঙ্গ করায় চুক্তিটি বাতিল করে নিবন্ধনকৃতদের টাকা ফেরত দিতে পারে এ জন্য প্রশাসন, ব্যাংক, সাংবাদিক, সুশীল সমাজ, স্কুল কর্তৃপক্ষসহ সর্বস্তরের সকলের সহযোগিতা কামনা করেছেন তিনি।