বিএনপি’র নির্দেশনা মানছেন না দলীয় নেতাকর্মীরা, যত্রতত্র ব্যানার ফেস্টুন প্রদর্শন

ফাহিম ফিরোজ!! বরিশালে কেন্দ্রীয় বিএনপির নির্দেশ না মেনে চত্রতত্র ব্যানার ফেস্টুন প্রদর্শন করছেন নেতাকর্মীরা। ফলে উপেক্ষিত হচ্ছে বিএনপি’র ব্যানার ফেস্টুন ও বিল বোর্ড নামিয়ে ফেলার নির্দেশনা। আর সৌন্দর্য হারাচ্ছে নগরীর বিভিন্ন স্থাপনা ও সড়কের। যদিও স্থানীয় বিএনপির দাবি কেন্দ্রের নির্দেশনা অনুযায়ী সকলকে ব্যানার ফেস্টুন বিলবোর্ড নামিয়ে ফেলার অনুরোধ করেছেন তারা।
জানা গেছে, গত ১৮ নভেম্বর বিএনপি’র সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির চৌধুরী স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে সারাদেশের সকল নেতাকর্মীকে ব্যানার ফেস্টুন ও বিলবোর্ড নামিয়ে ফেলার নির্দেশ দেন। বিষয়টি পর্যবেক্ষণের জন্য একটি টিম গঠন করে কেন্দ্রীয় বিএনপি। ৫ সদস্য বিশিষ্ট ওই টিমের দলনেতা করা সহ-তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক আমিরুজ্জামান খান শিমুলকে। দলীয় সিদ্ধান্তের অগ্রগতি পর্যবেক্ষণের জন্য গঠিত হয় টিমটি।
বিএনপি সূত্র জানায়, গত ৮ সেপ্টেম্বর বিএনপি’র কেন্দ্রীয় দফতর থেকে এক নোটিশে বলা হয়েছে, ঢাকা-বরিশালসহ সারাদেশে বিএনপি এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদেরকে রং-বেরংয়ের পোষ্টার, ব্যানার, ফেষ্টুন প্রদর্শণ করা হচ্ছে। এটি অত্যন্ত দৃষ্টিকটু, অনভিপ্রেত এবং দলের শৃঙ্খলা পরিপন্থী কাজ। দলের অতি উৎসাহী কতিপয় নেতৃবৃন্দ নিজেদের ছবি সম্বলিত পোষ্টার প্রকাশ করছেন এবং ফেষ্টুন ও ব্যানার ঝুলিয়ে রেখেছেন। এ ধরনের পোষ্টার, ব্যানার, ফেষ্টুন প্রদর্শণ করা থেকে নেতাকর্মীদের বিরত থাকার জন্য নির্দেশ প্রদান করা হয়।
এরপরও বরিশাল সহ সারাদেশে ওই নির্দেশনাটি সঠিকভাবে বাস্তবায়ন হয়নি। ফলে সরেজমিনে পর্যবেক্ষণ করার জন্য আমিরুজ্জামান খান শিমুলের নেতৃত্বে একটি টিম গঠন করা হয়।
১৮ নভেম্বর পর্যবেক্ষণ টিম গঠন হওয়ার পরে ২০ নভেম্বর বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের জন্মদিন উদযাপন থেকে নেতাকর্মীদের বিরত থাকার নির্দেশ দেয়া হয়। এর আগে ৭ নভেম্বর জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে বরিশালের অধিকাংশ বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা ব্যানার ফেস্টুন ও বিলবোর্ড স্থাপন করেন। ওই ব্যানার পোস্টার ও ফেস্টুন বরিশাল নগরীর বিভিন্ন সড়কে এখনো দৃশ্যমান। ফলে লঙ্ঘিত হচ্ছে কেন্দ্রীয় বিএনপির নির্দেশ।
সরেজমিনে দেখা গেছে, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি’র) দলীয় সিদ্ধান্তকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে বরিশাল নগরীর সদর রোড সহ বিভিন্ন স্থানে এখনও ব্যানার ফেস্টুন ঝুলিয়ে রেখেছেন বরিশাল জেলা ছাত্রদলের সভাপতি মাহফুজুল আলম মিঠুর অনুসারী জেলা ছাত্রদলের ১নং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মিরাজুল ইসলাম নাঈম, জেলা ছাত্রদলের সহ সভাপতি রাশেদ খান নাদিম এবং জেলা ছাত্রদল কর্মী সায়েম রেজা। নগরীর হাতেম আলী কলেজ চৌমাথা এলাকায় বরিশাল জেলা ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক রাশেদুজ্জামান রাশেদ জাতীয় বিপ্লব ও সাংহতি দিবসের বিশাল এক ব্যানার টানিয়ে রেখেছেন।
এছাড়া বরিশাল মহানগর ছাত্রদলের সভাপতি রেজাউল করিম রনির অনুসারী মহানগর ছাত্রদলের ১ নং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আসাদুল ইসলাম খান বাপ্পি নগরীর সদর রোডের কাকলীর মোরে উদয়ন স্কুলের সৌন্দর্যকে নষ্ট করে সুবিশাল এক ব্যানার টানিয়ে রেখেছেন। দলীয় সিদ্ধান্তকে অমান্য করে ব্যানার ঝুলিয়ে রাখায় তা অত্যন্ত দৃষ্টিকটু হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জেলা ছাত্রদলের এককর্মী বলেন, আন্দোলন সংগ্রামে আমরা রাজপথে ছিলাম। দলীয় সিদ্ধান্তকে সর্বদা সাধুবাদ জানিয়ে দলের জন্য কাজ করেছি। কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে যে যত বড় ব্যানার ফেষ্টুন ও বিলবোর্ড টানাবে সে তত বড় নেতা। তিনি আরও বলেন, নগরীতে ব্যানার পোস্টার ফেস্টুন ঝুলিয়ে দলের সিদ্ধান্তকে যারা উপেক্ষা করছে তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। নতুবা তাদের কারনে দলের ভাবমুর্তী নষ্ট হবে।
এ বিষয়ে বরিশাল মহানগর বিএনপির আহবায়ক মনিরুজ্জামান খান ফারুক বলেন, কেন্দ্রীয় বিএনপি নির্দেশনা অনুযায়ী আমরাও সকলকে ব্যানার ফেস্টুন ও বিলবোর্ড নিজ উদ্যোগে নামিয়ে ফেলার অনুরোধ করেছি। যদি নিজ উদ্যোগে ব্যানার ফেস্টুন না নামায় তাহলে কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষণ টিমের নেতৃবৃন্দকে অবহিত করা হবে।