ভোলায় অনিয়মের চিত্র ধারণকালে হামলা, সাংবাদিকসহ আহত ৬

মে ২৩ ২০২৫, ২০:২৪

ভোলা প্রতিনিধি : ভোলার তজুমদ্দিনে স্লইজগেটে নির্মাণকাজে অনিয়মের খবর সংগ্রহ করার সময় হামলা চালিয়ে সাংবাদিকসহ ৬ জনকে আহত করেছে ঠিকাদারের লোকজন। এ ঘটনায় একজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার (২২ মে) সন্ধ্যায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান গোলাম রাব্বানী কনস্টাকশনের লোকজন এ হামলা চালায়।

আহত সাংবাদিক মো. ফারুক, শামিম ও সেলিমকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। এদিকে, শুক্রবার (২৩ মে) আজগর আলী নামের এক হামলাকারীকে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠিয়েছে পুলিশ।

হামলায় আহত তজুমদ্দিন প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও ঢাকা প্রতিদিনের উপজেলা প্রতিনিধি মো. ফারুক জানান, চাঁদপুর ইউনিয়নে নতুন স্লুইসগেটের ঢালাইসহ নির্মাণকাজ চলছে। সাংবাদিকদের কাছে এলাকাবাসী ওই কাজে অনিয়মের অভিযোগ করলে দৈনিক ইত্তেফাকের তজুমদ্দিন উপজেলা সংবাদদাতা রফিক সাদীসহ কয়েকজন সাংবাদিক সেখানে যান। তখন নির্মাণ কাজ চললেও কাজ তদারকির দায়িত্বে থাকা উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) কোনো কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন না। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রকৌশলীকেও সেখানে পাওয়া যায়নি। শ্রমিকরা কাঁদা মিশ্রিত নিম্নমানের পাথর-বালু, জমাট বাধা সিমেন্ট দিয়ে ঢালাই কাজ করছেন। এসব অনিয়মের চিত্র (ভিডিও) ধারণ করার সময় হাফেজ ও রুবেল সাংবাদিকের মোবাইল চিনিয়ে নিয়ে গালমন্দ করেন। বাকবিতণ্ডার একপর্যায়ে আজগর আলী ও আলাউদ্দিন দলবল নিয়ে সাংবাদিক ফারুকের ওপর হামলা চালায়।

গ্রামবাসী সাংবাদিকদের উদ্ধার করতে গেলে তাঁদের ওপর হামলা চালায় ঠিকাদারের লোকজন। এ সময় দুপক্ষের মারামারিতে মো. শামীম, মো. সেলিম, মো. ফারুক, সালাউদ্দিন, ইয়ামিনসহ ছয়জন গ্রামবাসী আহত হন। তাদের মধ্যে তিনজনকে তজুমদ্দিন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।

পাউবো সূত্র জানায়, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান গোলাম রাব্বানী কনস্ট্রাকশন দুটি জলকপাটসহ ৬ দশমিক ২ কিলোমিটার মাটির বাঁধ নির্মাণ ও বাঁধের তীরে ব্লক ফেলার কাজ করছে। এ কাজের চুক্তিমূল্য ৭৪ কোটি ১৭ লাখ টাকা। এর নির্মাণকজে অনিয়মের অভিযোগ আনেন এলাকাবাসী।

তবে নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার ও অনিয়মের অভিযোগ অস্বীকার করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রকৌশলী মো. মমিন জানান, পাথর, বালু ও সিমেন্টের অনুপাত ঠিক ছিল। যখন সাংবাদিকরা সাইটে গেছেন, তখন সেখানে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কোনো কর্মকর্তা ছিলেন না। তারা অন্য কাজে ছিলেন।’ এ প্রকৌশলী বলেন, ‘শ্রমিকরা অশিক্ষিত ও স্থানীয় তাই তারা কথা-কাটাকাটি করেছেন, যা তাদের কাম্য ছিল না।’

পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপসহকারী প্রকৌশলী মো. তানভীর হাসান অনিয়মের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘বৃহস্পতিবার ইউএনওর কার্যালয়ে জরুরি সভায় অংশ নেন। ২টার পর তিনি সোনাপুরের সাইটে ছিলেন। আবার অন্য একটি সাইটে তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী এসেছিলেন। সেখানেও তাকে সময় দিতে হয়েছে।’

তজুমদ্দিন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মোহাব্বত খান জানান, সাংবাদিকের ওপর হামলার ঘটনায় মো. ফারুক বাদী হয়ে ৮ জনকে আসামি করে থানায় মামলা করেছেন। ওই হামলার আসামি আজগর আলীকে শুক্রবার ঘটনাস্থল থেকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে।