ভিক্ষা নয় শ্রম দিয়ে বাঁচতে চান শহিদ খান

জুন ১৪ ২০২৫, ১৮:৩৫

ঝালকাঠি প্রতিনিধি : শারীরিক প্রতিবন্ধকতা ও চরম দারিদ্রের মাঝেও ভিক্ষার পথ বেছে নেননি ঝালকাঠির নলছিটির শহিদ খান (৩৫)। চার বছর বয়সে জ্বরে আক্রান্ত হয়ে দুটি পা অচল হয়ে যায় তার। বহু চিকিৎসা করেও আর ফিরতে পারেননি স্বাভাবিক জীবনে। তবুও আত্মসম্মান বজায় রেখে ছোট উদ্যোগে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন জীবিকার।

নলছিটি পৌরসভার পরমপাশা এলাকার বাসিন্দা শহিদ খান প্রয়াত সুলতান খানের ছেলে। চলাফেরা করতে না পারলেও রাস্তার পাশে একটি মেশিন বসিয়ে পথচারীদের ওজন মেপে দিন কাটাচ্ছেন তিনি। শহরের বিভিন্ন সড়ক ও বাজারের পাশে বসে ওজন মেপে দেন। যে টুকু টাকা পান, তাই দিয়েই চলে তার পাঁচ সদস্যের সংসার।

মেশিনটির ওপর শহিদ লিখে রেখেছেন, ‘চার্জ বাধ্যতামূলক নয়’। কেউ টাকা না দিলেও তিনি কিছু বলেন না। তার ভাষায়, ‘আমার এই মেশিনে কেউ দাঁড়িয়ে ওজন মেপে যদি কিছু টাকা দেয়, তাহলে সেটাই আমার জন্য সম্মানের বিষয়। আমি চাই মানুষ আমাকে একজন শ্রমজীবী মানুষ হিসেবে দেখুক, ভিক্ষুক হিসেবে নয়।’

শহিদের দুই ছেলে ও এক মেয়ে। বড় ছেলে মাদরাসায় আর মেয়েরা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়ে। ভাই রিকশা চালান, বোনদের অবস্থাও ভালো নয় তাই পরিবার থেকেও কোনো সহায়তা পান না শহিদ।

স্থানীয়রা জানান, শহিদের আত্মমর্যাদাবোধ সমাজের জন্য অনুকরণীয়। অনেকেই তাকে সহায়তা করতে স্বেচ্ছায় তার কাছে ওজন মেপে যান।

নলছিটি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নজরুল ইসলাম বলেন, ‘শহিদের মতো একজন যুবকের আত্মসম্মান সমাজের জন্য দৃষ্টান্ত। তাকে সরকারি সহায়তা দেয়ার উদ্যোগ নেয়া হবে।’