ভূমিহীন সনদে আশ্রয়নের ঘর ও ৫০ শতাংশ খাস জমির মালিক শ্রমিকলীগ নেতা

ডিসেম্বর ০৭ ২০২৪, ১৮:৫০

স্টাফ রিপোর্টার !! ভূমিহীন সনদে নিয়েছেন ৫০ শতক খাস জমি। জমি বন্দোবস্ত পাওয়ার বছর খানেকের মাথায় তা দিয়েছেন বিক্রি করে। এরপরে সরকারি আশ্রয়ন প্রকল্পে পুনরায় ভূমিহীন সনদ নিয়ে নিয়েছেন পাকাঘর। আর এ সবই সম্ভব হয়েছে আওয়ামী লীগ নেতাদের সহায়তায়। কারণ যিনি এই জ্বালিয়াতি করেছেন তিনি বরিশাল সদর উপজেলার চরবাড়িয়া ইউনিয়ন শ্রমিক লীগের যুগ্ম সম্পাদক স্বপন ফরাজজী। জেলা শ্রমিক লীগের সভাপতি শাহজাহান হাওলাদার এর সহায়তায় তিনি এসব পেয়েছেন।

চরবাড়িয়া ইউনিয়ন যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক আল আমিন হাওলাদার এর অভিযোগের প্রেক্ষিতে এসব তথ্য পাওয়া যায়। গত ২৮ নভেম্বর বরিশাল জেলা প্রশাসক বরাবর আল আমিন হাওলাদার স্বপন পরাজী বিরোধী জালিয়াতির অভিযোগ দেন। অভিযোগে তিনি স্বপন ফরাজীকে বন্দোবস্তু দেয়া ৫০ শতক খাস জমির বন্দোবস্ত বাতিল ও সরকারি আশ্রয়ন প্রকল্পের ঘর বাতিলের দাবি জানান।

চরবাড়িয়া ইউনিয়ন যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক আল আমিন হাওলাদার তার অভিযোগে উল্লেখ করেন,বরিশাল সদর উপজেলার চরবাড়িয়া ইউনিয়নের সাপানিয়া মৌজায় সাপানিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বিপরীত দিকে আশ্রয়ন প্রকল্পে ২০২৩ সালে ভূমিহীনদের ঘর প্রদানকালে তিনি একটি ঘর পাওয়ার জন্য আবেদন করেন। যাচাই-বাছাইতে তালিকায় ঘর পাওয়ার জন্য তার র নামও নিবন্ধিত হয়েছিল।

তবে তিনি বিএনপির রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত হওয়ায় ঘর দেয়া হয়নি। তারজন্য বরাদ্দকৃত সাপানিয়া আশ্রয়ন প্রকল্পের ২৩ নম্বর ঘরটি দেয়া হয়েছে চর্বারিয়া ইউনিয়ন শ্রমিক লীগের যুগ্ম সম্পাদক স্বপন ফরাজীকে। স্বপন ফরাজী একই ইউনিয়নের সাপানিয়া গ্রামের মৃত কাঞ্চন ফরাজির ছেলে।

ফ্যাসিস্ট আওয়ামীলীগ সরকারের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত হওয়ায় স্বপন ফরাজী ও তার স্ত্রী রুমা বেগম ২০১৯ সালে (মোকাদ্দমা নং ১১৫ কেটি/১৭-১৮ তারিখ ৩০/০৭/১৯) ভূমিহীন সেজে ৫০ শতাংশ জমি নিয়েছে। ওই জমি তিনি বিক্রি করে পুনরায় সাপানিয়া সরকারি আশ্রয়ন প্রকল্পে ২৩নম্বর ঘরটি নিজের নামে বরাদ্দ নিয়েছে।

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোঃ ওবায়দুল্লাহ বলেন, স্বপন ফরাজীর বিরুদ্ধে দেয়া ঐ অভিযোগটি আমরা পেয়েছি। বিষয়টি তদন্তের জন্য সহকারী কমিশনার (ভূমি)বরিশাল সদরকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। তিনি প্রতিবেদন দিলেই ব্যবস্থা নেয়া হবে।

সহকারী কমিশনার (ভূমি) বরিশাল সদর আজাহারুল ইসলাম বলেন, স্বপন ফরাজী ৫০ শতক জমি পেয়েছেন এবং আশ্রয়ন প্রকল্পে একটি ঘর বরাদ্দ পেয়ে সেখানে রয়েছেন। এক ব্যক্তি একই সাথে সরকারের এই দুই সুবিধা গ্রহণ করতে পারবেন না। আমরা এ বিষয়ে শীঘ্রই ব্যবস্থা গ্রহণ করব। অভিযুক্ত শ্রমিকলীগ নেতা স্বপন ফরাজী ৫০ শতক জমি ও ঘর দুটি পাওয়ার কথা স্বীকার করলেও এ বিষয়ে আর কিছু বলতে রাজি হননি।