বরগুনায় টানা বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা, জনজীবনে দুর্ভোগ

বরগুনা প্রতিনিধি : একটানা দেড় সপ্তাহ অব্যাহত প্রবল বৃষ্টিপাতে বরগুনার পৌর শহর ও গ্রামীণ জনপদের নীচু এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। এতে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়েছেন খেটে খাওয়া নিম্ন আয়ের মানুষ ও ফুটপাতে বসা ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা।
রোববার (২২ জুন) সকালে বরগুনার বেশ কয়েকটি নিম্ন অঞ্চল ও পাথরঘাটা পৌর শহরসহ উপজেলার বেশ কিছু এলাকায় ঘুরে দেখা গেছে, বৃষ্টির পানি জমে থাকায় রাস্তাঘাট ও বাজারে চলাচলে ব্যাঘাত সৃষ্টি হচ্ছে। পৌর শহরের কোথাও কোথাও ড্রেন উপচে পানি রাস্তায় উঠে এসেছে। পাথরঘাটা পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডে পর্যাপ্ত ড্রেন না থাকায় অনেক জায়গায় জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে।
এছাড়া জেলার চারটি পৌরসভা ও ৪২টি ইউনিয়নের অধিকাংশ নীচু এলাকা ও বসত বাড়ির সামনে হাঁটুসমান পানি জমে গেছে।
তালতলী উপজেলার সোনাকাটা ইউনিয়নের লাউপাড়া গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য জলিল ফকির জানান, গত দেড় সপ্তাহের টানা বৃষ্টিতে বাসার সামনে রাস্তায় হাঁটুপানি জমে গেছে। বাড়ি থেকে বের হতে পারছি না। বৃষ্টির পানি সরানোর কোনো ব্যবস্থাও নেই।
একই চিত্র দেখা গেছে, বরগুনা সদরের বদরখালী, গৌরীচন্না, আয়লা পাতাকাটা, বুড়িরচর, এম বালিয়াতলী, নলটোনা, পাথরঘাটার সদর ইউনিয়ন, কালমেঘা, কাকচিড়া, রায়হানপুর, বেতাগীর বুড়ামজুমদার, হোসনাবাদ, আমতলী, চাওড়া, হলদিয়া, আঠারগাছিয়া, কুকুয়া, আড়পাঙ্গাশিয়া ও গুলিশাখালী ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চলে। অতিবৃষ্টিতে নীচু জমিতে পানিবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। অনেক জায়গায় বসত ঘরের চারপাশ ও ফসলের জমি পানিতে তলিয়ে রয়েছে।
ঢলুয়া ইউনিয়নের রায়ভোগ বাজারের মুদি দোকানদার মান্নান বলেন, অতি বৃষ্টির পানি জমে আমার দোকানের চারদিক ও বাজারের রাস্তা প্লাবিত হয়েছে। তাই লোকজন আসছে না ও বিক্রিও বন্ধ।
লতাকাটা গ্রামের ইজিবাইক চালক রাজা বলেন, অতি বৃষ্টির পানিতে বাড়ির রাস্তা তলিয়ে গেছে। গাড়ি নিয়ে বের হতে পারছি না।
অপর ইজিবাইক চালক হাবিব বলেন, রাস্তায় বের হলেও ভাড়া নেই, লোকজন ঘরেই বসে আছে, দরকারি কাজ ছাড়া বাসা থেকে বের হচ্ছেন না।
এদিকে অতি বৃষ্টির কারণে দিনমজুর, রিকশাচালক, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, নীচু ও ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার সাধারণ মানুষ চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন। একদিকে কাজ নেই, অন্যদিকে বাড়ির সামনেই জমে থাকা পানিতে চলাচলও তাদের জন্য কঠিন হয়ে পড়েছে।
কলাপাড়া আবহাওয়া অফিসের একটি সূত্র জানায়, আরো কয়েকদিন বৃষ্টি থাকতে পারে। অতি ভারি বর্ষণের কারণে পানিবদ্ধতা সৃষ্টি হওয়াটা স্বাভাবিক। তবে সবাইকে সতর্ক থাকার অনুরোধ জানানো হয়েছে।
এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসন থেকে বলা হয়েছে, অতি বৃষ্টিতে পৌরসভার যে সকল স্থানে পানিবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে সেগুলো চিহ্নিত করে দ্রুত পানি সরানোর ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।