বিএনপি নেতাকে শ্রমিক লীগ নেতা সাজিয়ে জেলা প্রশাসনে অভিযোগ

স্টাফ রিপোর্টার !! বরিশাল সদর উপজেলার চরবাড়িয়ায় বিএনপি নেতাকে শ্রমিকলীগ নেতা সাজিয়ে জেলা প্রশাসকের কাছে অভিযোগ দিয়েছেন এক যুবক। তবে ওই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন বিএনপি নেতা স্বপন ফরাজী। অভিযোগকারী আল আমিন হাওলাদার নিজেকে চরবাড়িয়া ইউনিয়ন যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক দাবী করেছেন। কিন্তু অনুসন্ধানে পাওয়া গেছে তিনি চরবাড়িয়া ইউনিয়ন শ্রমীক লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক।
২০১৫ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারী গঠিত চরবাড়িয়া ইউনিয়ন শ্রমীক লীগের কমিটিতে ২২নং ক্রমিকে আইন বিষয়ক সম্পাদক হন তিনি। অপরদিকে স্বপন ফরাজী চরবাড়িয়া ইউনিয়ন শ্রমিক দলের যুগ্ম আহবায়ক এবং ৪নং ওয়ার্ড বিএনপির প্রচার সম্পাদক পদে রয়েছেন বলে জানাগেছে।
আল আমিন হাওলাদার তার অভিযোগে উল্লেখ করেন, স্বপন ফরাজী ইউনিয়ন শ্রমিক লীগের যুগ্ম সম্পাদক থাকা অবস্থায় ভূমিহীন পরিচয় দিয়ে ৫০ শতাংশ জমি ও আশ্রয়ন প্রকল্পের একটি ঘর পেয়েছেন। তিনি আশ্রয়নের ঘর দাবী করে পাননি। ঘর চেয়ে বঞ্চিত হওয়ায় তিনি এ অভিযোগ দিয়েছেন। অনুসন্ধানে জানা গেছে, স্বপন ফরাজীর পৈত্রিক সম্পত্তি নদীতে বিলিন হয়ে যায়। এরপর ভূমিহীন হিসেবে সাপানিয়া আশ্রয়ন প্রকল্পের ২৩ নম্বর ঘরটি বরাদ্দ পান তিনি। পরে ৫০ শতাংশ জমি কার্ডের মাধ্যমে বন্দোবস্ত পান। ওই জমিতে তিনি কৃষিকাজ করে জীবিকা নির্বাহ করছেন।
এ বিষয়ে স্বপন ফরাজী বলেন, নদী ভাঙনে ভূমিহীন হয়েছি। আবেদনের প্রেক্ষিত্রে সাবেক সরকার আশ্রয়নের একটি ঘর দিয়েছিলো। এর মানে এই নয় যে আমি আওয়ামীলীগ করি। আমি বিএনপির রাজনীতি করি। যে কারণে প্রকাশ্যে মারধরের শিকার হয়েছি। যিনি আমাকে আওয়ামীলীগ বানিয়েছে তিনি নিজেই একজন শ্রমীকলীগ নেতা। আর ভূমিহীন হওয়ায় কার্ডের মাধ্যমে ওই জমি বন্দোবস্ত পেয়েছি।
এ বিষয়ে বরিশাল সদর উপজেলা শ্রমীক দলের সভাপতি রফিকুল ইসলাম আকন বলেন, ২০০১ সাল থেকে স্বপন ফরাজী বিএনপির রাজনীতি করে আসছেন। এছাড়া ইউনিয়ন শ্রমীক দল এবং ওয়ার্ডে তার পদও রয়েছে। আশ্রয়নের ঘর পেতে হলে শ্রমীক লীগ হতে হবে কেন? আর যারা ওকে শ্রমীক লীগ বানিয়েছেন তাদেরকে অবশ্যই কমিটির কাগজ দেখাতে হবে। একই কথা বলেছেন তালতলী বাজার ব্যবসায়ী কমিটির সাধারণ সম্পাদক পিন্টু খান।
ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ও সাবেক চেয়ারম্যান জিয়াউল ইসলাম সাবু বলেন, স্বপন ফরাজী বিএনপির একনিষ্ট একজনকর্মী। ৪নং ওয়ার্ড বিএনপির প্রচার সম্পাদক এবং সর্বশেষ গঠিত ইউনিয়ন শ্রমীক দলের যুগ্ম আহবায়ক পদে রয়েছেন। স্বপন ফরাজী অতন্ত্য গরীব হওয়ায় ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান তাকে এই ঘরটি দিয়েছেন।
অভিযোগকারী আল আমিন হাওলাদার বলেন, আমি ১৬ বছর ধরে নির্যাতিত। আমার অভিযোগ স্বপন ফরাজী একই সাথে দুটো সরকারি সুবিধা নিতে পারবে না। আর সে শ্রমীক লীগ করতো এটার প্রমাণ করার দায়িত্ব তার নয় বলে দাবী করেন। তবে তার কাছে শ্রমিক লীগের কমিটির কোন কাগজপত্র নেই। অপরদিকে চরবাড়িয়া ইউনিয়ন শ্রমীক লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য পদে তার নাম থাকার বিষযটি উরিয়ে দেন আল আমিন হাওলাদার।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে চরবাড়িয়া ইউনিয়ন শ্রমীক লীগের সভাপতি আব্দুস সালাম আকন বলেন, স্বপন ফরাজী শ্রমীক লীগের কেউ না। আলামিনের নাম আছে শ্রমীক লীগে, তবে এই আলামিনকে তিনি চেনেন না। চিনতো সাধারণ সম্পাদক। তিনিতো মারা গেছেন।