অনিয়ম ও দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েছেন মিরুখালী কলেজের অধ্যক্ষ

মঠবাড়িয়া প্রতিনিধি : অনিয়ম ও দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েছেন মিরুখালী কলেজের অধ্যক্ষ মাহবুবুল হক সবুজ। কর্তৃপক্ষের তদারকি না থাকায় অনিয়মটাই এখন নিয়মে পরিনত হয়েছে এখানে। বিধিবহির্ভূতভাবে প্রতিষ্ঠান ও শিক্ষার্থীদের নিকট থেকে অর্থ সংগ্রহ করে দীর্ঘদিন ধরে তা আত্মসাৎ করে আসছেন তিনি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মাহবুুবুল হক ২০১৯ সালে কলেজটির অধ্যক্ষ হিসেবে যোগ দিয়ে ২০২১ সালে ল্যাব এসিস্ট্যান্ট পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেন। এ বিজ্ঞপ্তি প্রতিষ্ঠান ও স্থানীয় পর্যায়ে গোপন রেখে অধ্যক্ষ তার নিজ এলাকা ঝালকাঠির রাজাপুর থেকে পছন্দের প্রার্থী সহ তিন জন প্রার্থীকে আবেদন করান। এরপর সুবিধাজনক সময়ে ওই তিনজনের মধ্য রাবেয়া নামের প্রার্থীকে সাড়ে ৪ লাখ টাকায় নিয়োগ দেন।
এছাড়া রাবেয়াকে মিরুখালী এলাকায় থাকারও ব্যবস্থা করেন তিনি। এজন্য কলেজটির সিকিউরিটি গার্ড মানিক মিয়ার সাথে বিবাহের ব্যবস্থা করা হয়। এজন্য রাবেয়ার চাকরিতে ঘুষের টাকার ২ লাখ ৫০ হাজার প্রদান করেন ওই সিকিউরিটি গার্ড- ৪র্থ শ্রেনীর কর্মচারী মানিক।
এ বছরের ৭৬ জন এইচএসসি পরীক্ষার্থীর নিকট থেকে প্রবেশপত্র (এডমিট) বিতরনের সময় প্রতি পরীক্ষার্থীর নিকট থেকে ৫ শত করে টাকা আদায় করেন তিনি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ খবর ছড়িয়ে পড়লে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের (ইউএনও) নির্দেশে পরীক্ষার্থীদের ডেকে টাকা ফেরত দেন অধ্যক্ষ মাহবুবুল হক।
তবে হাল ছাড়েননি অধ্যক্ষ।টাকা আদায়ের আরেকটি ক্ষেত্র তৈরি করেন তিনি। আর সেটি হলো কৃষি বিষয়ের প্রাকটিক্যাল পরীক্ষা। এ বাবাদ ৭৬ জন পরীক্ষার্থীর নিকট থেকে ২০০ টাকা করে আদায় করার ব্যবস্থা করেন তিনি।
টেস্ট পরীক্ষায় অনুত্তীর্ণদের নিকট থেকে সুবিধা নিয়ে উত্তীর্ণ দেখিয়ে ফরম ফিলাপের ব্যবস্থাও করে দেন তিনি। ২০২২-২৩ শিক্ষা বর্ষে ১১২ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে টেস্ট পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে ৬৫ জন। কিন্তু ফরম ফিলাপ করানো হয় ৭৬ জন।টেস্ট পরীক্ষায় অংশগ্রহণ না করা ১১ জনকে নিয়মবহির্ভূতভাবে সুবিধা দিয়েছেন অধ্যক্ষ। আদায় করেছেন পরীক্ষার ফিস সহ বাড়তি টাকা।
অধ্যক্ষ্য রাজাপুরের নিজ বাড়ি থেকে পিরোজপুর জেলার মিরুখালীতে এসে কলেজ করায় সপ্তাহে ২ দিন আসেন তিনি।বাকি দিনগুলো হাজিরা খাতায় অনুপস্থিত না দেখিয়ে কৌশলে বরিশাল শিক্ষা বোর্ডে যাতায়াত খরচ সহ নানা রকম খরচের ভাউচার করেন তিনি। এসব নয় ছয় দেখার জন্য কলেজ পরিদর্শক থাকলেও যথাসময়ে মাসোয়ারা পেয়ে যান তারা।পরিদর্শন খাতায় স্বাক্ষর দিয়ে অনিয়ম ও দুর্নীতির বৈধতা দিয়ে দেন কলেজ পরিদর্শক পদে থাকা এসব কর্মকর্তারা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষক জানান,প্রতিবছর প্রায় দেড় লাখ টাকা টিউশন ফি আসলেও সাধারণ শিক্ষকদের আদৌ জানানো হয় না। ৪/৫ বছর ধরে এ টাকাও আত্মসাৎ করেন তিনি। স্বজনপ্রীতির মত পক্ষপাতিত্ব অবলম্বন করে প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষকদের মধ্যে গ্রুপিং তৈরি করেছেন তিনি।
এ ব্যাপারে মিরুখালী কলেজের অধ্যক্ষ মাহবুবুল হক সবুজ জানান,এডমিট কার্ডের টাকা ফেরত দেওয়া হয়েছে। কিছু শিক্ষক আমার বিরুদ্ধে তথ্য ফাঁস করে দিচ্ছে। এতে কলেজের উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।