স্কুলছাত্রীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার, স্বজনদের দাবি ধর্ষণের পর হত্যা

জুন ২৮ ২০২৫, ১৮:৪৯

পটুয়াখালী প্রতিনিধি : পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জে এক স্কুলছাত্রীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। শুক্রবার (২৭ জুন) গভীর রাতে উপজেলার ২নং মির্জাগঞ্জ ইউনিয়নের ঘটকের আন্দুয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। তবে স্বজনদের দাবি, ওই ছাত্রীকে ধর্ষণের পর হত্যা করে মরদেহ ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে।

পুলিশ ও পরিবার সূত্রে জানা গেছে, প্রায় দেড় বছর ধরে মির্জাগঞ্জের ঘটকের আন্দুয়া গ্রামে ওই শিক্ষার্থী তার দাদি রোকেয়া বেগমের সঙ্গে বসবাস করছিল। ওই ছাত্রী এলাকায় একটি স্কুলে ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ে। শুক্রবার সন্ধ্যায় তার দাদি ওই মেয়েটিকে বাসায় একা রেখে পান খাওয়ার জন্য অন্য বাসায় চলে যান। কয়েক ঘণ্টা পর দাদি বাসায় ফিরে ফ্যানের সঙ্গে নাতনির ঝুলন্ত মরদেহ দেখতে পান এবং পুলিশে ফোন দেন। পরে পুলিশ এসে মরদেহ উদ্ধার করে।

নিহত শিক্ষার্থীর খালা উপমা পারভিন খাদিজা বলেন, ‘আমার বোনের মেয়ে আত্মহত্যা করেনি বরং তাকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়। বেশ কয়েকমাস ধরে ফুফাতো ভাই সাকিল ও সাজিত বিভিন্নভাবে যৌন হয়রানি করে আসছিলো ওই শিক্ষার্থীকে।

একদিন সে গোসল করতে গেলে ওর ফুফাতো ভাইরা গোপনে তা ভিডিও করে রাখে এবং যা দিয়ে বিভিন্ন সময়ে তাকে যৌন হয়রানি করে। এ ছাড়া বাড়ির সামনে থাকা শামীম নামে এক ব্যক্তিকে দিয়ে দাদি রোকেয়া বেগম বিভিন্ন ভাবে পড়াশোনার বিষয়ে বোঝাতে চাইলে সেও সেই সুযোগে শিক্ষার্থীকে যৌন হয়রানি করেন বলে জানান তার খালা।’

এ ছাড়া তিনি আরও বলেন, ‘তার বোনের মেয়ে বিভিন্ন সময় ফোন দিয়ে তার ফুফাতো ভাইদের বিষয়ে বিভিন্ন কথা বলতো এবং তার দাদির কথাও বলতো আর কান্না করতো।’

মামাতো ভাই আশিকুল ইসলাম সিয়াম বলেন, ‘শুক্রবার রাত ২টার দিয়ে ওই শিক্ষার্থীর দাদি রোকেয়া বেগম ফোন দিয়ে নাতনির ফাঁস দেয়ার কথা জানান। কিন্তু ঘটনা ঘটে রাত ১০টার দিকে আর আমাদের জানায় রাত ২টায়। আর এটি কোনোভাবেই আত্মহত্যা হতে পারে না। আমরা এই হত্যার বিচার চাই বলে জানান তিনি। তবে এ বিষয়ে তার দাদি রোকেয়া বেগমকে একাধিক বার কল দিলেও তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

মির্জাগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শামীম হাওলাদার বলেন, ‘খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে। তবে এটি হত্যা না আত্মহত্যা সে বিষয়ে এখনি বলা যাচ্ছে না। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পটুয়াখালী মর্গে পাঠানো হয়েছে। তদন্ত রিপোর্ট পেলে বোঝা যাবে এটি হত্যা না আত্মহত্যা।’