গ্রেপ্তার আতঙ্কে ঘরছাড়া আওয়ামীলীগ নেতাকর্মীরা

ফাহিম ফিরোজ !! ছাত্র জনতার আন্দোলনের মুখে ৫ আগস্ট আওয়ামীলীগ সরকারের পতনের পর থেকে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছে নেতাকর্মীরা। দায়িত্ব নেয় অন্তবর্তীকালিন সরকার। এরপর বিচারের দাবী ওঠে স্বৈরশাসক হাসিনা ও তার দোসরদের। সারাদেশে আওয়ামীপন্থিদের বিরুদ্ধে শুরু হয় মামলা দায়ের। বরিশালেও এর ব্যতিক্রম নয়। বরিশাল মহানগর ও জেলার প্রতিটি উপজেলায় একাধিক মামলা দায়ের করে অন্য রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা। শুরু হয় গ্রেফতার অভিযান। গ্রেফতার হয় জেলা ও মহানগরের শীর্ষ নেতারা। ফলে গ্রেফতার আতঙ্ক ছড়িয়ে পরে গোটা জেলায়। যদিও মামলা দায়েরের অনেক পূর্বে আওয়ামীলীগের শীর্ষস্থানীয় নেতাকর্মীরা অন্যত্র পালিয়ে গেছেন। ফলে আরও বেশি আতঙ্কিত হয়ে পড়েন তৃণমূল আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীরা। গ্রেফতার এড়াতে ঘর ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন তারা।
জানা গেছে, গত ৫ আগস্ট আওয়ামীলীগ সরকারের পতনের সাথে সাথে শীর্ষস্থানীয় নেতাকর্মীরা পালিয়ে গেলে তৃণমূলে ছড়িয়ে পড়ে আতঙ্ক। আবার অনেকে পালানোর সময় গ্রেফতার হয়েছেন। বরিশালে বিএনপির অফিসে ভাঙচুর অগ্নিসংযোগ ও নেতাকর্মীদের হত্যা চেস্টার মামলায় সাবেক পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক শামীম, সাবেক মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন, সাবেক এমপি গোলাম কিবরিয়া টিপু, সাবেক এমপি শাহে আলম, সাবেক এমপি আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহর মেজো ছেলে মঈন আব্দুল্লাহ, সিটি করপোরেশনের ১৯ জন কাউন্সিলরসহ জেলার অসংখ্য নেতাকর্মীরা গ্রেফতার হন। আবার অনেকে উচ্চ আদালত থেকে এনেছেন জামিন।
এ বিষয়ে কথা হয় বরিশাল মহানগর ছাত্রলীগের এক নেতার পরিবারের সাথে, তারা জানায় ৫ আগস্টের পর থেকে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন ওই নেতা। ফলে পরিবার পরিজন ছাড়াই গ্রেফতার আতঙ্ক নিয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন তিনি। একই কথা বলেছেন এক যুবলীগ নেতা। নাম প্রকাশ না করার শর্তে তিনি বলেন, ৫ আগস্টের দিন থেকে শীর্ষ নেতার আত্মগোপনে চলে গেছে। আর যারা যেতে পারেনি তারা হয়েছেন গ্রেফতার। সাধারণ নেতাকর্মীরা রয়েছেন গ্রেফতার আতঙ্কে। শুধু তাই নয় তারা হামলা ও খুন জখমের ভয়তে পরিবার থেকে রয়েছেন দূরে।
একজন মহিলা ইউপি সদস্য বলেন, আওয়ামীলীগ করি নাই। সাধারণ ভোটারদের ভোটে মেম্বার হয়েছি। সরকার পতনের সাথে সাথে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙ্গচুরসহ রাজনৈতিক মামলায় গ্রেফতার আতঙ্কে পালিয়ে বেড়াচ্ছি। শুধু তাই নয় তার স্বামীকেও গ্রেফতারে প্রতিদিন পুলিশ যাচ্ছে তাদের বাড়ি।
এদিকে জামিন পাওয়া নেতাকর্মীরা জানান, জামিন পেলেও গ্রেফতার আতঙ্ক কাটেনি। অন্য যে কোন মামলায় গ্রেফতার হতে পারেন। আবার কারো বিরুদ্ধে রয়েছে একাধিক মামলা। ফলে গ্রেফতার আতঙ্ক থেকে ই যায়।
জানাগেছে, স্বৈরশাসক হাসিনার পতনের পর থেকে বরিশালে কয়েক হাজার আওয়ামীলীগ নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ সব মামলায় আরও গ্রেফতার হয়েছেন, বরিশাল সিটির সাবেক প্যানেল মেয়র ও মহানগর মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদক কহিনুর বেগম, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সুমন সেরনিয়াবাতসহ অসংখ্য নেতাকর্মীরা।
এ বিষয়ে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার মোঃ শফিকুল ইসলাম বলেন, যারা নিরাপরাধ তাদের ভয় পাওয়ার কিছু নেই। কোন নিরাপরাধ ব্যক্তি গ্রেফতার হবে না। তাছাড়া মামলায় নামধারী আসামীদের গ্রেফতারে পুলিশ অভিযান চালাবে-ই।