কুয়াকাটায় একের পর এক ডলফিনের মরদেহ ভেসে আসায় উদ্বেগ

সেপ্টেম্বর ০৫ ২০২৫, ১৮:৪৪

স্টাফ রিপোর্টার : পটুয়াখালীর কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতে আরো একটি মৃত ইরাবতী ডলফিন ভেসে এসেছে। বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) বিকেলে চর গঙ্গামতি এলাকায় সৈকতের কাছে প্রায় ১০ ফুট লম্বা মৃত ডলফিনটি ভেসে আসে। একের পর এক ডলফিনের মরদেহ ভেসে আসায় উদ্বেগ ছড়িয়েছে পরিবেশপ্রেমীদের মধ্যে।

পরিবেশকর্মী কেএম বাচ্চু বলেন, ‘চলতি বছর কুয়াকাটা উপকূলে এর আগে আরো ৮টি মৃত ডলফিন ভেসে আসে। এটি ৯ নম্বর ডলফিন। একের পর এক ডলফিনের মরদেহ ভেসে আসলেও বিষয়টি নিয়ে কোনো গবেষণা বা প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা কেন নেওয়া হচ্ছে না সেই প্রশ্ন পরিবেশকর্মীদের।’

উপকূল পরিবেশ রক্ষা আন্দোলন, কুয়াকাটা (উপরা) এর আহ্বায়ক আবুল হোসেন রাজু জানান, জঙ্গলের ভেতরে মৃত ডলফিনটি দেখতে পাই। দেখে মনে হচ্ছে এটি সকালের জোয়ারে এসেছে। ইরাবতী প্রজাতির এই ডলফিন যা দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া ও বঙ্গোপসাগর সমুদ্র উপকূলের নিকটে নদীর মোহনাতে বিভিন্নভাবে দেখা যায়।

কুয়াকাটা ডলফিন রক্ষা কমিটির টিম লিডার রুমান ইমতিয়াজ তুষার জানান, চলতি বছরে এখন পর্যন্ত মোট ৯টি ডলফিনের মৃতদেহ সৈকতে ভেসে এসেছে। এই উপকূলীয় এলাকাজুড়ে আমরা সার্বক্ষণিক কাজ করছি ডলফিন নিয়ে। আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন জানাচ্ছি যাতে এই মৃত্যুর সঠিক কারণ বের করা হয়।

বাংলাদেশ মেরিটাইম বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী গবেষক (সিফ্যাচ) সাগরিকা স্মৃতি বলেন, ‘ডলফিনের মৃতদেহ ভেসে আসা অনেক পুরনো ঘটনা। বর্ষা মৌসুমে এগুলো বেশি দেখা যায়। উন্নত বিশ্বগুলো সামুদ্রিক পরিবেশ রক্ষায় আমাদের থেকে বেশি এগিয়ে।

আসলে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইন ২০১২ অনুযায়ী ডলফিন ও সংরক্ষিত সামুদ্রিক প্রাণী বাঁচাতে সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলো এগিয়ে না আসলে এই সমস্যার সমাধান হবে না।’ বনবিভাগের মহিপুর রেঞ্জ কর্মকর্তা একেএম মনিরুজ্জামান জানান, ডলফিনটির শরীরের চামড়া অনেকটা উঠে গিয়েছিল।

প্রয়োজনীয় তথ্য নথিভুক্ত করে মাটি চাপা দেওয়া হয়েছে। উল্লেখ্য, ইরাবতী ডলফিন বাংলাদেশে একটি বিরল ও বিপন্ন প্রজাতির জলচর প্রাণী হিসেবে বিবেচিত। সুন্দরবন ও কুয়াকাটার মোহনায় এদের আনাগোনা দেখা যায়। তবে সাম্প্রতিক সময়ে নিয়মিত মৃত ডলফিন ভেসে আসা এই এলাকার সামুদ্রিক পরিবেশ নিয়ে প্রশ্ন তুলছে।