ভোলায় দুর্নীতির অভিযোগে অবরুদ্ধ বিআইডব্লিউটিএর কর্মকর্তা

ভোলা প্রতিনিধি : নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে বিআইডব্লিউটিএর (বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ) ভোলা নদী বন্দরের সহকারী পরিচালক মো. রিয়াদ হোসেনকে অবরুদ্ধ করে রেখেছেন স্পিডবোট মালিক ও চালকরা। বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে তাকে অবরুদ্ধ করা হয়। পরে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের আশ্বাসে রিয়াদকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
এর আগে দুপুর ৩টার দিকে ভোলার ইলিশা লঞ্চঘাটে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের দুজন অতিরিক্ত সচিব ও একজন উপসচিব ভোলায় আসলে তাদের কাছে স্মারকলিপি দেওয়া হয়।
এ সময় অতিরিক্ত সচিব দেলোয়ারা বেগম, সুরাইয়া পারভীন শেলি ও উপসচিব মোছা. জেসমিন আক্তার বানুসহ নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় এবং বিআইডব্লিউটিএর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। এর আগে দুপুর ১টা থেকে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিবদের ভোলায় আসার খবরে ভোলা-বরিশাল ও ভোলা-লাহার রুটের স্পিডবোট মালিক-চালক সমিতির সদস্যরা ভোলার ইলিশা লঞ্চঘাটে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেন।
লিখিত অভিযোগে স্পিডবোট মালিক-চালক সমিতি উল্লেখ করে, ভোলার ভেদুরিয়া লঞ্চঘাটের ভুক্তভোগী স্পিডবোট মালিক ও চালকরা দীর্ঘদিন ধরে বিআইডব্লিউটিএর ভোলা নদী বন্দরের সহকারী পরিচালক রিয়াদ হোসেনের দ্বারা নানাভাবে হয়রানির শিকার হয়ে আসছেন। এ কর্মকর্তা তাদের কাছ থেকে প্রতিমাসে স্পিডবোটের টাইম-টেবিলের নাম করে এক হাজার ২০০ টাকা করে নিয়ে থাকে।
এর কোনো রসিদ দেয় না। ভেদুরিয়া ঘাটে মোট ৭৫ থেকে ৮০টি বোট প্রতিমাসে তাকে প্রায় এক লাখ টাকা চাঁদা দিতে হয়। এই চাঁদা না দিলে তাদের মামলার ভয় দেখানো হয়। এ ছাড়াও প্রতিমাসে আরো ৬০ হাজার টাকা বিআইডব্লিউটিএর প্রধান কার্যালয়ের নাম দিয়ে স্পিডবোট মালিকদের কাছ থেকে নিয়ে থাকে।
তার এ সব দুর্নীতির বিরুদ্ধে স্পিডবোট মালিক ও চালকরা গত দুই মাস ধরে আন্দোলন করায় তাদের এখন আর কোনো টাইম-টেবিল দিচ্ছে না। বিষয়টি নিয়ে তারা গত ২১ জুন ভোলার জেলা প্রশাসক বরাবর এবং ২৩ জুন বিআইডব্লিউটিএর চেয়ারম্যান বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছেন। এরপরও এ দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা রিয়াদ হোসেনের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। উল্টো রিয়াদ হোসেন বিভিন্ন লোকের কাছে বলে বেড়াচ্ছেন তিনি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে ম্যানেজ করে ফেলেছেন।
লিখিত অভিযোগে তারা আরো জানায়, সহকারী পরিচালক রিয়াদ হোসেনের বিরুদ্ধে গত ১৩ জুলাই স্পিডবোট মালিক ও চালকরা ভোলার জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন করেছেন এবং ১৮ জুলাই বিআইডব্লিউটিএর চেয়ারম্যান বরাবর আরো একটি স্মারকলিপি দিয়েছেন।
এরপরও সহকারী পরিচালক রিয়াদ হোসেনের বিরুদ্ধে কোনো আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। রিয়াদ হোসেনের আগে বরগুনা জেলাতেও এ ধরনের অপকর্ম করার অভিযোগ রয়েছে বলে তারা জানতে পেরেছেন। তার এ সব ঘুষ ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করায় উল্টো বোট মালিক ও চালকদের মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করে আসছে রিয়াদ। তার এ সব দুর্নীতির তদন্ত করে বিচারের পাশাপাশি তাকে দ্রুত ভোলা থেকে বদলি না করলে আগামী ২০ সেপ্টেম্বর থেকে তারা অনির্দিষ্টকালের জন্য স্পিডবোট ধর্মঘট চালিয়ে যাবেন।
তবে এ বিষয়ে সচিবরা মিডিয়ার সামনে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। তবে অভিযোগকারীদের কাছে এ বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছেন।অভিযুক্ত বিআইডব্লিউটিএর ভোলা নদীবন্দরের সহকারী পরিচালক মো. রিয়াদ হোসেনের মোবাইলফোনে একাধিকবার কল করলেও তিনি রিসিভ করেননি।