‘চর দখল’ নিয়ে বিএনপির হামলা-পাল্টা হামলায় আহত ৬

বাউফল প্রতিনিধি !! পটুয়াখালীর বাউফলে চর দখল নিয়ে বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে হামলা-পাল্টা হামলায় ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতিসহ ৬জন আহত হয়েছেন। শনিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে এ ঘটনা ঘটেছে।
আহতরা হলেন- কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ-দপ্তর সম্পাদক মুনির হোসেনের অনুসারী হিসেবে কালাইয়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি জসিম আহমেদ তুহিন (৫২), বিএনপি নেতা ইঞ্জিনিয়ার ফারুক আহমেদ তালুকদারের অনুসারী উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহবায়ক রিয়াজ পঞ্চায়েত (৪০), কালাইয়া ইউনিয়ন ছাত্রদলের নেতা শাহরাজ জয় (২৪), রেদোয়ান সরদার (২০), ইয়াসিন পঞ্চায়েত (২৪) ও সজল (২৭)।
দলীয় ও স্থানীয় সূত্র জানায়, উপজেলার কালাইয়া ইউনিয়নের চর ফেডারেশন বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে কালাইয়া ইউপি চেয়ারম্যান ও উপজেলা যুবলীগের সাধারন সম্পাদক এস.এম ফয়সাল আহম্মেদ ওরফে মনির মোল্লার দখলে ছিলেন। সরকার পতনের পর ওই চর দখলে নিতে মরিয়া হয়ে উঠে বিএনপির একাধিক পক্ষ। সবশেষ ওই চর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি তুহিনের লোকজন দখলে নিয়ে যায়।
ঘটনার দিন সকাল ১০টার দিকে ইঞ্জিনিয়ার ফারুক তালুকদারের অনুসারী উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহবায়ক রিয়াজ পঞ্চায়েত দলবল নিয়ে চর দখল করতে যায়। খবর পেয়ে ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি জসিম আহমেদ তুহিনের লোকজন দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়। হামলায় রিয়াজ পঞ্চায়েতসহ ৫জনকে আহত করা হয়। ছাত্রদল নেতা জয় ও রেদোয়ান গুরুতর আহত হয়। তাদের দুজনকে শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।
এ ঘটনার জের ধরে একই দিন বেলা ১২টার দিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে উপজেলা ছাত্রদলের আহবায়ক মুজাহিদুল ইসলাম ওরফে মুজাহিদ মুন্সীর নেতৃত্বে ৪০-৫০ জনের একটি দল কালাইয়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি জসীম আহমেদ তুহিনের উপর হামলা চালায়।
আত্মরক্ষার জন্য বিএনপি নেতা তুহিন স্থানীয় একটি দোকানে আশ্রয় নিলে সেখানে গিয়ে আরেকদফা তার উপর হামলা চালায় ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। ওই দোকানে প্রায় ১ ঘন্টা অবরুদ্ধ করে রাখা হয় তুহিনকে। পরে পুলিশ ওই দোকানে গিয়ে বিএনপি নেতা তুহিনকে উদ্ধার করে থানা হেফাজতে নেয়।
কালাইয়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মো. জসিম আহমেদ তুহিন বলেন, ‘ছাত্রদলের কর্মীরা কৃষকের ধান লুট করতে গিয়ে মারধরের শিকার হয়েছেন। সে বিষয়ে আমি কিছু জানি না। আমি অসুস্থ্য। হাসপাতালের সামনে ওষুধ কিনতে এসেছি। তখন ছাত্রদলের মুজাহিদ মুন্সীর নেতৃত্বে আমার ওপর হামলা করা হয়। জীবন বাঁচানোর জন্য ক্লিনিক ও দোকানের মধ্যে আশ্রয় নিয়েও রক্ষা পাইনি। স্থানীয় লোকজন ও পুলিশ না থাকলে হয়তো আমাকে মেরে ফেলা হত।’
তবে বিএনপি নেতা তুহিনের ওপর হামলার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন উপজেলা ছাত্রদলের আহবায়ক মুজাহিদুল ইসলাম। তিনি বলেন, ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি তুহিন আওয়ামী লীগের লোকজন নিয়ে ছাত্রদলের নেতার জয়সহ ৬জন কুপিয়ে জখম করেছেন। এতে ছাত্র দলের নেতাকর্মীরা তাৎক্ষনিক প্রতিবাদ করেন। আমি এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত নই।
এবিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব আপেল মাহমুদ ফিরোজ বলেন, জসীম আহমেদ তুহিন একজন নম্র ও ভদ্র নেতা। তাকে অপমান অপদস্ত মেনে নেওয়া যায় না। এ ঘটনার দৃষ্টান্ত মুলক শাস্তি দাবী করছি।
এবিষয়ে বাউফল থানার ওসি তদন্ত আতিকুল ইসলাম বলেন, বিএনপি নেতা তুহিন পুলিশের হেফাজতে রয়েছেন। অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থ নেওয়া হবে।