লঞ্চে যাত্রী নেই তবুও কেবিন সংকট

জানুয়ারি ০৪ ২০২৫, ২০:১৯

স্টাফ রিপোর্টার !! বরিশাল-ঢাকা মহাসড়কে সড়ক দুর্ঘটনা বৃদ্ধি পাওয়ায় এবং তীব্র শীতের কারণে যাত্রীরা নৌ-পথকে নিরাপদ ভেবে চলাচলের জন্য ভিড় করছে। এর ফলে দুই বছর আগের যৌবন ফিরে পেয়েছে বরিশাল-ঢাকা রুটের লঞ্চ। তবে রোটেশন পদ্ধতির কারণে এ রুটে চলাচল করছে মাত্র দুটি লঞ্চ। এছাড়াও একই দিনে একই কোম্পানির দুটি লঞ্চ চলাচল করায় লঞ্চের স্টাফরা সিন্ডিকেট করে কেবিনের কৃত্রিম সংকট তৈরি করে রাখছে এবং টিকিট কালোবাজারিদের সঙ্গেও রয়েছে তাদের নিবিড় সম্পর্ক।

এতে মালিকরা লাভবান হলেও বিপাকে পড়ছেন সাধারণ যাত্রীরা। কারণ কোনোভাবেই দুটি লঞ্চ দিয়ে যাত্রী সামাল দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। যাত্রীদের অভিযোগ, কেবিনের সংকটের কারণে অনেকেই যাত্রা নিশ্চিত করতে পারছে না। এই মুহূর্তে আরো দুই-একটি লঞ্চ এ রুটে বাড়ানো এখন সময়ের দাবি।

জানা গেছে, পদ্মা সেতু উদ্বোধনের আগে লঞ্চের একটি কেবিন ছিল সোনার হরিণ। এখন সেই অবস্থা আবার হয়েছে। বিশেষ করে গত কয়েক দিন ধরে কোনো ধরনের কেবিনের টিকিট পাওয়া যাচ্ছে না। যদিও ২০২২ সালের ২৬ জুলাই চলাচলের জন্য পদ্মা সেতু খুলে দেওয়ার পর লঞ্চ ব্যবসায় ধস নামে। এ সেতু উদ্বোধনের আগে প্রতিদিন বরিশাল-ঢাকা রুটে আটটি করে লঞ্চ চলাচল করত।

বিআইডব্লিউটিএ সূত্র বলছে, ঢাকা থেকে বরিশালসহ দক্ষিণাঞ্চলের ১৪টি রুটের মধ্যে তিনটি চূড়ান্তভাবে বন্ধ হয়ে গেছে। এগুলো হলো বরগুনা, আমতলী, ভাণ্ডারিয়া। এছাড়া ঝালকাঠি রুটটিতে অনিয়মিত একটি লঞ্চ চলাচল করছে। বরিশাল ও পটুয়াখালী রুটে লঞ্চের সংখ্যা কমিয়ে যথাক্রমে দুটি ও একটি করা হয়েছে। কেবল ভোলা জেলার আটটি রুটে এখনো নিয়মিত আগের মতোই লঞ্চ চলাচল করলেও যাত্রীর সংখ্যা কমেছে।

কেবিন না পাওয়া ভুক্তভোগী সি এইচ মাহাবুব জানান, ‘পরিবার নিয়ে শুক্রবার ঢাকায় যাব বলে দুই-দিন আগে লঞ্চের কেবিনের জন্য দুটি অফিস গিয়ে হতাশ হয়েছি। কারণ দেখলাম দুই-দিন আগেও কোনো ধরনের কেবিন নেই। অনেক রিকোয়েস্ট করেছি একটি কেবিনের জন্য কিন্তু পাইনি। তবে শুক্রবার সকালে বরিশাল লঞ্চঘাটে গেলে দেখতে পাই কিছু লোক লঞ্চের সামনে দাঁড়িয়ে কেবিন বিক্রি করছে। আমি সেখানে একটি ডাবল কেবিন চাইলে এক লোক ২ হাজার টাকার কেবিন সাড়ে ৩ হাজার টাকা চায়। এতে অনেকটা হতাশ হয়ে ফিরে আসি এবং নথুল্লাবাদ গিয়ে গাড়ির টিকিট কাটি।’

এ বিষয়ে অ্যাডভেঞ্চার লঞ্চের সুপারভাইজার মাসুদ খান জানান, যেহেতু শিক্ষার্থীদের বার্ষিক পরীক্ষা শেষ হয়েছে তাই পরিবার নিয়ে সবাই বেড়াতে যাচ্ছে, তাই লঞ্চে কেবিনের কিছুটা সংকট দেখা দিয়েছে। তবে এ সংকট ১০ জানুয়ারির পরে থাকবে না। দালালদের মাধ্যমে কেবিন পাওয়া যাচ্ছে এমন প্রশ্নে তিনি জানান, দেখেন এখন অধিকাংশ লঞ্চের অফিস নেই। যে কারণে কেবিনের বুকিং ফোনেই নেওয়া হয়। কে বা কারা ফোন দেয় সেটা তো বোঝা যায় না।