অভিযোগ বিএনপি নেতাদের বিরুদ্ধে
ভেঙে ফেলা হলো বঙ্গবন্ধু নৌকা জাদুঘর

বরগুনা প্রতিনিধি !! বরগুনায় বঙ্গবন্ধু নৌকা জাদুঘর ভাঙলেন বিএনপির নেতাকর্মীরা। শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) নৌকার আদলে নির্মিত জাদুঘরের দুই প্রান্ত কাটে তারা। এ সময় সংবাদকর্মীদের ছবি তুলতে বাধা দেওয়া হয়।
আবহমান গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী প্রায় ১০০টি নৌকার রেপ্লিকা নিয়ে ২০২০ সালের শেষের দিকে তৎকালীন জেলা প্রশাসক মোস্তাইন বিল্লার উদ্যোগে জেলা আইনজীবী সমিতির পূর্ব পাশে এই নৌকা জাদুঘরটি নির্মাণ করা হয়।
যার নামকরণ করা হয় বঙ্গবন্ধু নৌকা জাদুঘর। বরগুনা জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের উত্তর পাশে ৭৮ শতাংশ জমিতে ১৬৫ ফুট দৈর্ঘ্য এবং ৩০ ফুট প্রস্থে নৌকার আদলে নকশা করা জাদুঘরের মূল ভবন। এখানে স্থান পেয়েছে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের বিলুপ্ত ও প্রচলিত ১০০ ধরনের নৌকা। নদীমাতৃক বাংলাদেশে প্রাচীনকাল থেকেই অন্যতম প্রধান বাহন হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে নৌকা।
শনিবার সকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বিএনপির নেতাকর্মীরা গ্যাস সিলিন্ডার নিয়ে সেখানে নৌকার দুই প্রান্তে ভাঙার কাজ করছেন। সেখানে জেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক রেজবুল কবির, কেন্দ্রীয় যুবদলের সাবেক সহ-সাংগঠনিক অ্যাডভোকেট মুরাদ খান, জেলা যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক মুরাদুজ্জামান টিপন, জেলা যুবদলের দপ্তর সম্পাদক হুমায়ুন কবীর, কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম নয়ন, জেলা ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক আরিফ হোসেনসহ বিএনপি যুবদল ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
নৌকা জাদুঘরের জায়গায় শহীদ জিয়া পৌর পাঠাগার স্থাপন করার দাবি জানিয়ে বিএনপি নেতাকর্মীরা বলেন, এখানে পৌর গণপাঠাগার ছিল। তৎকালীন সরকারকে খুশি করার জন্য এটি নির্মাণ করা হয়।
এই জাদুঘর নির্মাণ করতে গিয়ে বরগুনার সর্বত্র চাঁদাবাজি করা হয়।
পর্যটন উদ্যোক্তা আরিফুর রহমান বলেন, বরগুনা উপকূলীয় জেলা, চারপাশে নদীবেষ্টিত, নৌকা আমাদের ঐতিহ্য। তবে দলীয় প্রতীক হিসেবে না দেখে ঐতিহ্য হিসেবে ভাবলে নৌকা জাদুঘরটা রাখা যেত। হয়ত নামের পরিবর্তন করে নৌকা জাদুঘরটা টিকিয়ে রাখা হলে আমাদের উপকূলের ঐতিহ্য টিকে থাকত।
বরগুনা জেলা যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক মুরাদুজ্জামান টিপন বলেন, নৌকা জাদুঘরের নামে ১০টা জাদুঘরের চাঁদা উঠানো হয়েছে। সরকারি সম্পত্তি দখল করে নৌকা জাদুঘর নির্মাণ করা হয়। তাই জনগণ এটা ভেঙে ফেলেছে।
জাতীয়তাবাদী যুবদলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সাবেক সহ-সাংগঠনিক অ্যাডভোকেট মুরাদ খান বলেন, নৌকা জাদুঘর এটাকে বঙ্গবন্ধু নৌকা জাদুঘর নাম দেওয়ার কারণে জনরোষ সৃষ্টি হয়েছে। জনগণ ৫ আগস্ট আগুন দিয়ে পোড়ানোর পর খালী হাতে ভাঙতে ব্যর্থ হলে সরঞ্জাম নিয়ে ভেঙে ফেলা হয়েছে।
জেলা প্রশাসকের নামে চাঁদাবাজি মামলা করার কথা জানিয়ে বরগুনা জেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট রেজবুল কবির বলেন, এখানে পৌর পাঠাগার ছিল, সেটা ভেঙে বঙ্গবন্ধু নৌকা জাদুঘর বানানো হয়। এখান থেকে কোটি কোটি টাকা লুটপাট করা হয়েছে। তৎকালীন সরকারের তেলবাজি করার জন্য বঙ্গবন্ধু নৌকা জাদুঘর বানানো হয়। এখন জনগণ এটা ভেঙে ফেলছে, যারা ভাঙছে তারা দেশ প্রেমিক।
এ বিষয়ে জানার জন্য বরগুনা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শফিউল আলমকে ফোন দিলে তিনি তা ধরেননি। কালের কণ্ঠ