‘মাদক কারবারে বাধা’ যুবককে কুপিয়ে হত্যা

ফেব্রুয়ারি ০২ ২০২৫, ২০:২৯

আমতলী প্রতিনিধি : বরগুনা তালতলীতে আরাফাত খান (২২) নামের এক ব্যক্তিকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। গতকাল শনিবার রাতে উপজেলার কচুপাত্রা পুরাতন বাজার এলাকায় এই হামলার ঘটনা ঘটে। পরে হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করে।

নিহত আরাফাতের স্বজনদের অভিযোগ, তালতলী উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ও পঁচাকেড়ালিয়া ইউনিয়নের কলারং গ্রামের শহীদ সিকাদার, তাঁর দুই ছেলে সোহেল সিকদার, আরাফাত সিকদার ও ভাতিজা বায়েজিদ সিকদার দীর্ঘদিন ধরে মাদক কারবার করে আসছেন। গত বৃহস্পতিবার শহীদ সিকদারের ছেলে সোহেল সিকদার ও আরাফাত সিকদার কচুপাত্রা বাজারে মাদক কারবার করতে যান। তাতে মোটরসাইকেলচালক আরাফাত খান বাধা দেন। এ নিয়ে তাঁদের মধ্যে ঝগড়া হয়।

গতকাল শনিবার রাত ৯টার দিকে আরাফাত খান প্রতিবেশী হাবিব উল্লাহকে নিয়ে মোটরসাইকেলে কচুপাত্রা পুরাতন বাজারে যাচ্ছিলেন। পথে ওত পেতে থাকা শহীদ সিকদার, তাঁর দুই ছেলে সোহেল সিকদার, আরাফাত সিকদার ও ভাতিজা বায়েজিদ সিকদারসহ ১০-১২ জন সন্ত্রাসী আরাফাত খানের মোটরসাইকেল আটকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর জখম করে। স্থানীয় লোকজনের সামনেই তাঁদের ওপর হামলা চালানো হলেও ভয়ে কেউ এগিয়ে আসেনি।

স্থানীয়রা তাঁদের উদ্ধার করে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। চিকিৎসক রাসেদ মাহমুদ রোকনুজ্জামান মোটরসাইকেলচালক আরাফাত খানকে মৃত ঘোষণা করেন। আহত হাবিব উল্লাহকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে পাঠানো হয়।

আজ রোববার পুলিশ নিহত আরাফাত খানের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য বরগুনা মর্গে পাঠায়। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে ওই দিন রাতে পুলিশ সাগর হাওলাদার নামের একজনকে আটক করেছে। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন বলেন, মোটরসাইকেলচালক আরাফাত খানকে কলারং গ্রামের শহীদ সিকদার ও তার দুই ছেলে সোহেল সিকদার, আরাফাত সিকদার ও ভাতিজা রায়েজিদ সিকদারসহ ১০-১২ জনে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেছে।

আহত হাবিব উল্লাহর বাবা ইলিয়াস হাওলাদার বলেন, ‘কলারং গ্রামের শহীদ সিকদার, তার দুই ছেলে ও ভাতিজা মিলে মোটরসাইকেলচালক আরাফাত খানকে কুপিয়ে হত্যা করেছে। আরাফাতের মোটরসাইকেলে আমার ছেলে হাবিব উল্লাহ ছিল। তাকেও কুপিয়ে গুরুতর জখম করেছে। আমি এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের শাস্তি দাবি করছি।’

নিহত আরাফাত খানের বাবা আব্দুল জলিল খান কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘মাদক বিক্রিতে বাধা দেওয়ায় আমার ছেলেকে শহীদ সিকদার ও তার দুই ছেলে, ভাতিজাসহ সহযোগীরা কুপিয়ে হত্যা করেছে। আমি এর বিচার চাই।’

শারিকখালী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. ফারুক খান বলেন, ‘মোটরসাইকেলচালক আরাফাত খান আমার ভাইয়ের ছেলে। তাকে শহীদ সিকদার, তাঁর ছেলে ও সহযোগীরা শত্রুতার জেরে কুপিয়ে হত্যা করেছে।’

আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. রাসেদ মাহমুদ রোকনুজ্জামান বলেন, আরাফাত খানকে হাসপাতালে আনার আগেই মারা গেছেন। আহত অপরজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে তালতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহজালাল বলেন, ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে সাগর হাওলাদার নামের একজনকে আটক করা হয়েছে। জড়িত অন্যদেরও আটক করার চেষ্টা চলছে।