ধর্ষণের শিকার শিশুটির পরিবারের নিরাপত্তায় পুলিশ মোতায়েন

মার্চ ১৯ ২০২৫, ১৯:৩০

আমতলী প্রতিনিধি : বরগুনার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শফিউল আলম পৌরসভার ওই বাড়িতে পুলিশ মোতায়েনের তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এর আগে গত ৪ মার্চ বিকেলে প্রাইভেট পড়তে গিয়েছিল সপ্তম শ্রেণির ওই কিশোরী (১৩)। পড়া শেষে বাড়ি ফেরার পথে তাকে সিজিত রায় নামের এক যুবকের নেতৃত্বে কয়েকজন অপহরণ করে। এরপর তাকে ধর্ষণ করা হয়। পরদিন ৫ মার্চ সকালে ওই কিশোরীকে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের পার্কে ফেলে রেখে যাওয়া হয়।

এ ঘটনায় কিশোরীর বাবা (৩৭) ওই দিন রাতেই বরগুনা সদর থানায় সিজিত রায়সহ দুজনের নামে ধর্ষণের মামলা করেন। পরদিন স্থানীয় জনতা দুজনকে ধরে পুলিশে দেয়। পুলিশ সিজিতকে আটক করে এবং তাঁর বন্ধুকে মুচলেকা রেখে ছেড়ে দেয়। কিশোরীর পরিবারকে মামলা তুলে নিতে এবং ঘটনা নিয়ে বাড়াবাড়ি না করতে শাসাতে থাকে আসামিপক্ষ। এরপর ১১ মার্চ কর্মস্থলে গিয়ে নিখোঁজ হন কিশোরীর বাবা। ওই দিন রাত সোয়া ১২টার দিকে মোবাইল ফোনের রিংটোনের সূত্র ধরে বাড়ির পাশের ঝোপের মধ্যে কিশোরীর বাবার লাশ পাওয়া যায়।

এ ঘটনায় কিশোরীর মা বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা পাঁচ-ছয়জনকে আসামি করে বরগুনা সদর থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। এ মামলায় ধর্ষণ মামলার প্রধান আসামির বাবাসহ চারজনকে আটক করেছিল পুলিশ।

বরগুনা জেলা পুলিশ সূত্রে জানা গেছ, মঙ্গলবার হাইকোর্টের আদেশের পর থেকে ভুক্তভোগী পরিবারের নিরাপত্তার জন্য একজন এএসআইয়ের নেতৃত্বে চারজন পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে তাদের বাড়িতে। পরবর্তী নির্দেশ না পাওয়া পর্যন্ত প্রতিদিন তিন পালায় বাড়িটিতে দায়িত্ব পালন করবে পুলিশ।

মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে ওই বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, ছোট্ট কাঠ-টিনের জরাজীর্ণ ঘরের সামনে একজন উপপরিদর্শকসহ চারজন অস্ত্রধারী পুলিশ সদস্য বাড়ির নিরাপত্তায় নিয়োজিত রয়েছেন।

স্থানীয় মন্দির সভাপতি বলেন, ‘মহামান্য হাইকোর্টের নির্দেশে নিহতের বাড়িতে পুলিশ সুপার মহোদয় পুলিশ মোতায়েন করেছেন। আগে আমাদের শঙ্কা থাকলেও হাইকোর্টের এই নির্দেশে আমরা শঙ্কামুক্ত। এতে আমরা এলাকাবাসী সন্তুষ্ট।’

ধর্ষণ মামলার বাদীকে হত্যা: নিহতের স্ত্রী বললেন, ‘সন্তানদের নিয়ে আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছি’ধর্ষণ মামলার বাদীকে হত্যা: নিহতের স্ত্রী বললেন, ‘সন্তানদের নিয়ে আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছি’ বরগুনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবদুল হালিম বলেন, মঙ্গলবার বিকেল থেকে পরিবারটির নিরাপত্তার জন্য পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। তিন পালায় ২৪ ঘণ্টা ওই বাড়িতে পুলিশ মোতায়েন থাকবে।

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শফিউল আলম বলেন, ‘হাইকোর্ট থেকে আমাদের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, ওই পরিবারের নিরাপত্তার জন্য কী ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। পরে আমরা বিষয়টি লিখিতভাবে আদালতকে অবহিত করি। আদালত পরিবারটির নিরাপত্তা জোরদারের নির্দেশ দিলে আমরা দুপুরে মৌখিক আদেশ পেয়েই ওই বাড়িতে পুলিশ মোতায়েন করেছি।’