স্বেচ্ছাসেবক দল নেতার হামলায় ব্যবসায়ী নিহত

ভোলা প্রতিনিধি : ভোলার চরফ্যাশনে স্বেচ্ছাসেবক দল নেতার হামলায় মাসুদ (৩৮) নামের এক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ওই পরিবারের অন্তঃসত্ত্বা নারীসহ আরও অন্তত ছয়জন।
পূর্ববিরোধের জেরে আজ শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১টায় উপজেলার দুলারহাট থানার আবুবক্করপুর ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডে এ ঘটনা ঘটে। নিহত মাসুদ ওই গ্রামের আবদুল খালেকের ছেলে। তিনি ঢাকার সাভারের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ছিলেন।
নিহত মাসুদের ভাই রায়হান জানান, তিনি ও তাঁর ভাইয়েরা ঢাকার সাভার এলাকায় ক্ষুদ্র ব্যবসা করেন। ঈদে তাঁরা ঢাকা থেকে গ্রামের বাড়ি বেড়াতে আসেন। গত বুধবার রাতে তাঁর স্ত্রী আকলিমা ও বোন সিমার মধ্যে ঝগড়া হয়।
এ সময় প্রতিবেশী, আবুবক্করপুর ইউনিয়নের স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক আলামিনসহ কয়েক যুবক ওই বাড়িতে গিয়ে ঝগড়ার কারণ জানতে চান। ওই সময় তাঁর ছোট ভাই রাসেল তাঁদের ঘরে ঢুকতে না দিয়ে বাড়ি থেকে চলে যেতে বলেন। এ নিয়ে ওই স্বেচ্ছাসেবক দল নেতার সঙ্গে তাঁদের বাগ্বিতন্ডা হয়।
ওই ঘটনার জের ধরে স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা তাঁর দলবল নিয়ে রাতেই প্রথম দফায় ওই বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুর করেন। পরে স্থানীয় বাসিন্দারা ছুটে এসে তাৎক্ষণিক ওই ঘটনার মীমাংসা করে দেন। এতে সন্তুষ্ট হননি স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা আলামিন। তাঁর অব্যাহত হুমকিতে বাড়িতেই অবরুদ্ধ ছিলেন রায়হানদের পরিবারের সদস্যরা।
এর মধ্যে আজ পারিবারিক কাজের জন্য রায়হান ও অপর ভাই মহসিন স্থানীয় দুলারহাট বাজারে যাচ্ছিলেন। ওই সময় স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা আলামিনসহ তাঁর সহযোগীরা মোটরসাইকেলযোগে তাঁদের গতিরোধ করে দুই ভাইকে বেধড়ক মারধর করেন। পরে তাঁরা আবার তাঁদের বাড়িতে গিয়ে বসতঘরে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করেন।
এ সময় রায়হানের ভাই মাসুদসহ অন্য সদস্যরা বাধা দিলে আলামিন ও তাঁর দলবল তাঁদের মারধর করে। এতে মাসুদসহ ছয় সদস্য গুরুতর আহত হন। প্রতিবেশীরা তাঁদের উদ্ধার করে চরফ্যাশন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে মাসুদকে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
নিহত মাসুদের চাচা সালাউদ্দিন জানান, আগের ঘটনার জন্য একটি সমঝোতার তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছিল। এর আগেই অভিযুক্ত ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক আলামিন আজ সকালে ফের তাঁর দুই ভাতিজার ওপর হামলা চালিয়ে তাঁদের বাড়িঘর ভাঙচুর করেন। তাঁদের হামলা ও মারধরে তাঁর ভাতিজা মাসুদ নিহত হয়েছেন। এ হত্যার বিচারের দাবি জানান তিনি।
এদিকে মাসুদের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে অভিযুক্ত ব্যক্তিরা পালিয়ে যান বলে জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁদের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন নম্বরও বন্ধ পাওয়া গেছে।
দুলারহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আরিফ ইফতেখার জানান, হাসপাতাল থেকে নিহত ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ভোলার মর্গে পাঠানোর প্রস্ততি চলছে। সেই সঙ্গে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের আটকে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।