নৌ বন্দর ও থানায় অভিযোগ

বিএনপি নেতাকে চাঁদা না দেয়ায় স্পিডবোট চলাচলে বাধা, নদী অবরোধ

ফেব্রুয়ারি ০৬ ২০২৫, ১৩:২৭

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বরিশালে চাঁদার দাবিতে স্পিডবোট চলাচলে বাধা দেয়ার অভিযোগ উঠেছে এক বিএনপি নেতা ও তার লোকজনের বিরুদ্ধে। এমনকি চাঁদা না দেয়ায় রশি দিয়ে নদী আটকে অবরোধ করেছেন তারা। এ ঘটনায় থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন স্পিড বোট মালিকরা। পাশাপাশি নদীবন্দর কর্তৃপক্ষ সহ সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দিয়েছেন। তবে চাঁদাদাবীর বিষয়টি অস্বীকার করেছেন বিএনপি নেতা মো: মোকলেছ মেম্বার। ঘটনাটি বরিশাল নগরীর তালতলী ঘাটের।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, গত ৫ আগস্টের পর থেকে তালতলী-মেহেন্দিগঞ্জের পাতারহাট সহ বিভিন্ন রুটে চলা চলরত স্পিড বোটের মালিকদের কাছে প্রতি মাসে ২০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে আসছেন শায়েস্তাবাদ ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক ও ইউপি সদস্য মো: মোকলেছ মেম্বার ও তার লোকজন। চাঁদার টাকা দিতে অস্বীকার করলে তাদের স্পীড বোট চলাচালে প্রতিবন্ধকতা সৃস্টি করে।

তাদের স্পীড বোটের বৈধ কাগজ পত্র ও রুট পারমিট থাকা স্বত্বেও বোট চলাচলে বাঁধা প্রদান করে। একপর্যায়ে নদী ভাঙ্গনের বিষয় উল্লেখ করে তাদের বৈধ স্পিডবোট চলাচল বন্ধের জন্য জেলা প্রশাসকের কাছে অভিযোগ দেয় বিবাদীরা। বিষয়টি তদন্তের জন্য বরিশাল সদর সহকারী কমিশনার ভূমি উভয়পক্ষকে ২ ফেব্রুয়ারি সকালে ডেকে পাঠান।

এসিল্যান্ড অফিসে বৈঠকের একপর্যায়ে মোকলেছ মেম্বার এর নেতৃত্বে মোঃ জাহাঙ্গীর হাওলাদার, মোঃ হাকিম আলী মীর, মোঃ খোকন হাওলাদার, মোঃ আল আমিন মীর, মোঃ শাহীন হাওলাদার, মোঃ আবুল হাওলাদার, মোঃ মুনসুর রাঢ়ী, খালেক হাওলাদার সহ আরো অজ্ঞাতনামা ৪০/৫০ জন স্পিড বোট মালিকদের উপর হামলা চালায় ও মারধর করে। চাদার টাকা না দিলে স্পিডবোট চলাচল বন্ধ করা সহ খুন জখমের হুমকি দেয়। পরে আহত স্পিডবোট মালিকরা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বরিশাল কোতোয়ালি মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ দেয়।

অভিযোগকারী মজনু আকন বলেন, তালতলী ঘাট থেকে স্পিড বোট চলাচলে দীর্ঘদিন ধরে বাধা দিচ্ছেন মোকলেছ মেম্বার। তারা প্রতিমাসে ২০ হাজার টাকা করে চাঁদা চায়। এখন তারা নদী আটকে অবরোধ করছে বৈধ স্পিড বোট চলাচলে বাধা দিচ্ছেন। বিষয়টি লিখিতভাবে বরিশাল নদী বন্দর কর্তৃপক্ষ ও থানা পুলিশকে অবহিত করা হয়েছে।

অভিযোগ অস্বীকার করে বিএনপি নেতা মোকলেছ মেম্বার বলেন, নদীর পাড় ভেঙে যাওয়ায় এলাকাবাসী নদী অবরোধ করে রেখেছেন। গত ৫ আগস্টের পর থেকে তালতলী থেকে স্পিড বোট চলাচলে বাধা দিচ্ছেন এলাকাবাসী। তিনি বলেন, চাঁদাদাবীর বিষয়টি সম্পূর্ণ মিথ্যা। তাছাড়া তদন্ত না হওয়া পর্যন্ত স্পীডবোট চলাচল বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছেন এসিল্যান্ড।

অভিযোগের ব্যাপারে তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই ইব্রাহিম বলেন, স্পিড বোর্ড চলাচলে নদীর পাড় ভেঙ্গে যায় এমন অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে এসিল্যান্ড অফিসে উভয় পক্ষের বৈঠকের হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। পরবর্তীতে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এ ব্যাপারে বরিশাল সদর সহকারি কমিশনার ভূমি মো: আজহার ইসলাম বলেন, বৈঠকে উভয় পক্ষকে শান্ত থাকতে বলা হয়েছে। এরপর অফিসের সামনে তারা উভয় পক্ষ হাতাহাতি ও সংঘর্ষে জড়ায়। দু এক সপ্তাহের মধ্যে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও সহকারী কমিশনার ভূমি সরেজমিনে তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছেন।