শিক্ষিকা ও শিক্ষার্থীদের মারধর: বিএনপি নেতাকে গ্রেপ্তারের দাবিতে সড়ক অবরোধ

স্টাফ রিপোর্টার : বরিশালের বাকেরগঞ্জে এক শিক্ষিকা ও শিক্ষার্থীদের মারধরের প্রতিবাদে সড়ক অবরোধ করেছে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। বুধবার (১৩ আগস্ট) সকাল সাড়ে ১০টায় বাকেরগঞ্জ উপজেলার চরাদি ইউনিয়নের মকিমাবাদ বাজারে বরিশাল-পটুয়াখালী-বাউফল উপজেলার আঞ্চলিক সড়ক অবরোধ করে শিক্ষার্থীরা।
হামলার শিকার ভুক্তভোগী শিক্ষিকা চরাদী ফজলুল হক মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শারীরিক শিক্ষা বিভাগের শিক্ষক নীলিমা আক্তার মনি (৫০), তার ছেলে রাজিন মাহমুদ সাদাত, শিক্ষার্থী এস এম সিফা (১২), তাসফিয়া মজুমদার(১৬), মেডি নার্সিং কোচিং সেন্টারের শিক্ষক ফয়সাল ফকির এইচ এম আবির সহ ১৫-২০ শিক্ষার্থী। অভিযুক্ত জাকির ডাকুয়া উপজেলার ২ নং চরাদি ইউনিয়নের নাজেম আলী ডাকুয়ার ছেলে ও ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক।
শিক্ষার্থীরা জানায়, মকিমাবাদ (সিংহ বাড়ী) বাজারে মেডি নার্সিং ও প্রতিভা একাডেমী কোচিং সেন্টারের গতকাল (১২ আগস্ট) মঙ্গলবার চরাদি ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জাকির ডাকুয়ার লোকজন চাঁদা দাবি করেন। চাঁদা দিতে অস্বীকার করে কোচিং সেন্টার কর্তৃপক্ষ। এসময়ে ওই বিএনপি নেতা জাকির ডাকুয়ার নেতৃত্বে দেলোয়ার ডাকুয়া, সাহেব আলী ডাকুয়া ও তারেক ডাকুয়া সহ বিশ থেকে পঁচিশ জন মিলে বেশি অস্ত্র নিয়ে কোচিং সেন্টারে ভাংচুর ও লুটপাট করে ওই সময় শিক্ষিকা নীলিমা আক্তার মনি প্রতিবাদ করলে তাকে মারধর করে, এসময় শিক্ষার্থীরা এগিয়ে গেলে তাদেরকেও বেধরক মারধর করে। হামলায় শিক্ষার্থী ও শিক্ষিকা সহ ১৫-২০ জন আহত হয়েছে। আহত শিক্ষার্থীরা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরলেও শিক্ষিকা নীলিমার অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে শের-ই- বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তিনি সেখানে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
এই হামলার প্রতিবাদে, বুধবার সকালে শিক্ষার্থীরা চাঁদাবাজ ও হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবিতে সড়ক অবরোধ করে স্লোগান দিতে থাকেন। শিক্ষার্থীদের করা আন্দোলনে প্রায় ৪ ঘন্টা সড়কে যান চলাচল বন্ধ থাকে। এতে সড়কের উভয় পাশে প্রায় ১০ কিলোমিটার যানজটের সৃষ্টি হয়। ফলে দুর্ভোগে পড়েন সাধারণ যাত্রীরা।
ক্লাস বর্জন করে শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধের খবর পেয়ে পরে দুপুর দেড়টায় ঘটনাস্থলে আসেন বাকেরগঞ্জ উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি তন্ময় হালদার ও বাকেরগঞ্জ থানা অফিসার ইনচার্জ আবুল কালাম। তারা অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মামলা গ্রহণ ও গ্রেপ্তারের আশ্বাস দিলে শিক্ষার্থীরা সড়ক অবরোধ প্রত্যাহার করে নেয়। পরে যানচলাচল স্বাভাবিক হয়।
ভুক্তভোগী শিক্ষিকা নীলিমা আক্তার মনি বলেন, আমি প্রচন্ড নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। দোষীদের বিচার চাই। অভিযোগের বিষয়ে জাকির ডাকুয়া বলেন, এবিষয়ে আমি কিছু জানি না। তবে এলাকায় আমার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ আছে তারা ষড়যন্ত্রমূলক এঘটনায় আমাকে মিথ্যাচার করছে।
দুই নং চরাদি ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি এইচ এম ফরিদুল ইসলাম বলেন, এমন কাজ সে করতে পারে না। তবে তার বিরুদ্ধে অভিযোগের প্রমাণ মিললে দলের সিনিয়র নেতৃবৃন্দ সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিবেন।
এবিষয়ে চরামদ্দি পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই আলমগীর বলেন, গতকাল পুলিশের জাতীয় জরুরী সেবা ৯৯৯-এ ফোন পেয়ে ঘটনা স্থলে গিয়ে দেখেছি হামলা ভাংচুরের দৃশ্য। ঘটনায় ভুক্তভোগীরা যদি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন তাহলে আমরা আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করব। এ ঘটনার জেরেই বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা আজ সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে।